সম্প্রতি পাবনার বেড়া উপজেলায় কারেন্ট জালের চেয়েও ভয়ংকর জালের সন্ধান পাওয়া গেছে। চীন থেকে আমদানি করা এই জালের নাম ‘দোয়ারি’। এই জাল অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও বিশেষভাবে তৈরি হওয়ায় ছোট-বড় সব ধরনের মাছ এতে আটকা পড়ে। ফলে মাছ ধরতে জেলেরা দোয়ারি জাল ব্যবহারে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, দোয়ারি জাল একেবারেই নতুন। চীন থেকে আমদানি করা এই জাল মশারির মতো সূক্ষ্ম হওয়ায় এতে বড় মাছ থেকে শুরু করে যেকোনো মাছের পোনা আটকে যায়। কারেন্ট জাল যে উপাদানে তৈরি, এটা অনেকটা সে ধরনের উপাদানে তৈরি। তবে এটি আরও বেশি সূক্ষ্ম ও বিশেষভাবে তৈরি। দুই-তিন সপ্তাহ ধরে বেড়া উপজেলার কাজীরহাট এলাকার যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে জেলেরা দোয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধরে আসছিলেন। এমন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে কাজীরহাট এলাকায় গত ২৩ আগস্ট রাতে যমুনা নদীতে সাত জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৫০০ মিটার দোয়ারি জাল জব্দ করা হয়েছে।
ওই রাতেই জেলেদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে সাত জেলের প্রত্যেককে এক হাজার করে মোট সাত হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী। পরে জব্দ করা দোয়ারি জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জরিমানা আদায়ের পর জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জরিমানাপ্রাপ্ত জেলেরা হলেন সোনাই মিয়া (৩৭), আলামিন হোসেন (২২), শাহ আলম (২৫), বাবুল আক্তার (৩০), বাবু মিয়া (২৮), আবদুর রাজ্জাক (৩০) ও শাহিন আলম (২৮)। তাঁদের সবার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে বলেন, বাজারে দোয়ারি জাল নতুন এসেছে। কারেন্ট জালে ছোট মাছ ধরা পড়ে না। কিন্তু দোয়ারি জালে পোনা থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব মাছই ধরা পড়ে। এ জন্য জেলেরা এ ধরনের জাল কেনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
বেড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, কয়েক দিন ধরেই নতুন দোয়ারি জাল সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই জালের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই জালের বিস্তার ঠেকানো না গেলে মাছ দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘দোয়ারি নামের মাছ ধরার জাল নতুন এসেছে। এ ধরনের জাল মাছের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। এসব জালের বিক্রি ও ব্যবহার ঠেকাতে আমাদের কঠোর নজরদারি থাকবে।’