খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারাগারে থেকেও বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম দ্বীন ইসলাম। তিনি জোড়া খুনের মামলায় দীর্ঘদিন ধরে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন। গত বছর নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
রোববার রাতে তাঁকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর চেয়ে ২ হাজার ৪০০ বেশি ভোট পেয়েছেন। ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন আবদুর শুকুর শেখ। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আর বিজয়ী দ্বীন ইসলাম ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম রাত নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব কেন্দ্রের তথ্য এখনো আসেনি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে এস এম দ্বীন ইসলাম আনারস প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।’
২০১৯ সালের ৭ আগস্ট দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের পহরডাঙ্গা গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে নাঈম শেখ নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গুরুতর আহত হন নাঈমের বাবা হিরু শেখ (৫৫)। পরে তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন ৮ আগস্ট নাঈমের মা মাফুজা বেগম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ওই বছর ২০ আগস্ট নাঈম হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ও অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে ছাগলাদাহ ইউপির চেয়ারম্যান এস এম দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর ওই ইউনিয়নের মানুষ পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আবু জাফর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
দ্বীন ইসলামের ছোট ভাই ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন। জেলারের মাধ্যমে মনোনয়নপত্রে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। জেলে থেকেও বিজয়ী হয়ে তাঁর ভাই প্রমাণ করেছেন এলাকায় তাঁর ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।
রোববার খুলনায় তৃতীয় ধাপে দুটি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে রূপসা উপজেলার একটি ইউনিয়ন ও তেরখাদা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন রয়েছে।