সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা গত শনিবার সকালে ঘোষণা করা আন্দোলন কর্মসূচি রাতেই প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর দুই ঘণ্টা পেরোনোর আগেই আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন হত্যার ঘটনায় আগামীকাল সোমবার বেলা আড়াইটায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌর এলাকার রুপালি চত্বরে শোকসভা করতে চান তিনি।
এদিকে একই স্থানে সোমবার বেলা তিনটায় আগে থেকেই বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের একটি অংশ। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কাদের মির্জার অব্যাহত মিথ্যাচারের প্রতিবাদে এই সমাবেশ করতে চান তাঁরা।
দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌর এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যে জেলা সদর থেকে কোম্পানীগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে বসুরহাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট খোলা থাকলেও মানুষজনের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা একের পর এক কর্মসূচির কারণে কোম্পানীগঞ্জে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাজারে সাধারণ লোকজনের উপস্থিতি অনেকটাই কম।
কাদের মির্জার অনুসারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শনিবার হরতাল চলাকালে সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের ফটক থেকে বসুরহাট বাজার পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন আবদুল কাদের মির্জা। পরে শনিবার রাত ৯টার দিকে আকস্মিক ফেসবুক লাইভে এসে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন কাদের মির্জা। এরপর রাত পৌনে ১১টার দিকে তিনি আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শুক্রবারে সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাককিরের মৃত্যুর ঘটনায় রুপালি চত্বরে শোকসভা আহ্বান করেন কাদের মির্জা। এরপর বেলা তিনটায় প্রতিবাদ সভার ঘোষণা দেন তিনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার বসুরহাটে রুপালি চত্বরে তাঁদের বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি বহাল রয়েছে। তাঁরা কর্মসূচি সফল করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে যদি নতুন করে নির্দেশনা পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে তাঁরা কর্মসূচি পালন করা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাদের মির্জা বসুরহাট রুপালি চত্বরে ফের কর্মসূচি আহ্বান করেছেন। অপর দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বাধীন অপর একটি অংশ আগেই রুপালি চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ওসি জাহেদুল হক বলেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ইতিমধ্যে জেলা থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।