ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

কাজ বাকি রেখেই খুলে দেওয়া হলো দুই উড়ালসড়ক

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাওজোড় এলাকার উড়ালসড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সড়কটিতে এখনও বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কাজ বাকি রেখেই গাজীপুরের নাওজোড় ও কালিয়াকৈরের সফিপুর বাজার এলাকার দুটি উড়ালসড়ক খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে একযোগে উড়ালসড়ক দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

গত দুই বছর করোনার কারণে ঈদে খুব বেশি মানুষ বাড়িমুখী হননি। এবার করোনার প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষ পরিবার–পরিজন নিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে গ্রামের বাড়িতে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঈদের ছুটি শুরু হলে মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সড়কপথে। এবারও সেই আশঙ্কায় আছেন ঘরমুখী মানুষ। ঈদযাত্রা ভোগান্তিহীন করতে সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। এর অংশ হিসেবেই উড়ালসড়ক দুটি খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাওজোড় এলাকায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উড়ালসড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। করোনার কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটায় ওই কাজ শেষ হতে বেশ সময় লেগে যায়। ওই উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ৮১০ মিটার। এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ ছাড়া সফিপুর বাজারে নির্মাণ করা হয় ১ হাজার ২৬২ মিটার দৈর্ঘ্যের উড়ালসড়ক। ১০৫ কোটি টাকার সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের জুনে। দুটি উড়ালসেতুর কাজই শেষ করার কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বরে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উড়ালসড়ক দুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলেও সেখানে কার্পেটিং করা হয়নি। লাইটিংসহ বেশ কিছু কাজ এখনো বাকি। এসব কাজ শেষ হতে আরও প্রায় দুই মাস লেগে যেতে পারে। কিন্তু এর মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে ঈদযাত্রা। এই সময়ে যাতে যানজট না হয়, সেই চিন্তা করে যানবাহন চলাচলের জন্য উড়ালসড়ক দুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুরে ছোট-বড় প্রায় পাঁচ হাজার শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিক উত্তরবঙ্গের। এ ছাড়া ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলো ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় হয়ে যেতে হয়। একদিকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ঘরমুখী মানুষ নবীনগর হয়ে চন্দ্রায় প্রবেশ করেন। আর গাজীপুর সদর, টঙ্গী, শ্রীপুরের শ্রমিকেরা গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা ও কোনাবাড়ী হয়ে প্রবেশ করেন চন্দ্রা ত্রিমোড়ে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় হয়ে ঈদে ২৩টি জেলার মানুষ যাতায়াত করেন। যে কারণে এখানে অনেক বেশি ভোগান্তি হয়।

সালনা হাইও‌য়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, ওই পথে যানবাহন বাড়লেও যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়, সে জন্য প্রকল্প কর্মকর্তাদের উড়ালসড়ক দুটি খুলে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা উড়ালসড়ক দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেন।

সাসেক প্রকল্প-১–এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহানা ফেরদৌস বলেন, গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এখন কয়েকটি উড়ালসড়কের ও ফুটওভার ব্রিজের কাজ বাকি ছিল। গাজীপুরের উড়ালসড়ক দুটির কাজ কিছু বাকি থাকলেও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বাকি কাজ ঈদের পর শেষ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া সাতটি ফুটওভার ব্রিজের মধ্যে দুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে, চারটির নির্মাণকাজ চলছে।