কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এক পৌর কাউন্সিলর ও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের পাঁচটি ঘর ও দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিন্টু মিয়া ও পরাজিত প্রার্থী মোশারফ হোসেন সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। মিন্টু মিয়া পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি ও মোশারফ ওয়ার্ড কমিটির সদস্য।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ নম্বর ওয়ার্ড পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি মোশারফ হোসেনের চাচাতো ভাই।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, পৌর শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকা নিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ড। মিন্টু মিয়া এই ওয়ার্ড থেকে টানা দুইবারের কাউন্সিলর। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। একই এলাকার মোশারফ এবার একই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেন। দুজনের সমর্থকের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জয়-পরাজয় নির্ধারণ হওয়ারও পরও উত্তেজনা কমেনি।
এলাকায় মোশরাফ ও আমিনুলের মালিকানাধীন একটি বিনোদনপার্ক আছে। গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মিন্টুর শ্যালক আল আমিন মোটরসাইকেলে করে ওই পার্কে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করেন। মোশারফের পক্ষ এই ঘটনা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানায়। এতে মিন্টুর পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়।
ওই উত্তেজনার সূত্র ধরে সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রথমে মিন্টুর সমর্থকেরা মোশারফের সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। পরে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে মিন্টুর পক্ষ এলাকায় একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এবং মোশারফের পক্ষের লোকজনকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পুলিশের লাঠিপেটায় আমিনুল আহত হন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পার্কের নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করার বিচার চাওয়াটা ছিল আমাদের অপরাধ। শুধু এই কারণে মিন্টুর পক্ষ আমাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ এসেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের লোকজনকে মারধর করে। বিশেষ করে পুলিশ আমার ওপর দুই দফা হামলা চালিয়ে লাঠিপেটা করেছে। আমার বসতবাড়ির প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে আবার আমাকে মারধর করে।’
মিন্টু মিয়া বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মোশারফ এলাকায় আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমি কোথাও সালিস করতে গেলে মোশারফ সেখানে ঝামেলার সৃষ্টি করে। আমার ওয়ার্ডে করোনার গণটিকা কর্মসূচি চলার সময়েও মোশারফ কেন্দ্রে গিয়ে ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসবের প্রতিবাদ করায় আমার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।’
বাড়িতে গিয়ে লাঠিপেটার অভিযোগ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিপেটা করতে হয়েছে। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারও বাড়িতে গিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ অবান্তর।