কর্ণফুলী নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা কমেছে

দূষণের কবলে কর্ণফুলী। আশপাশের বর্জ্য এসে প্রতিদিনই মিশছে নদীতে। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট এলাকায়
  ছবি: সৌরভ দাশ

দখল, দূষণ ও অব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা ছোট হওয়ার পাশাপাশি গভীরতা কমে আসছে। গত ২২ বছরে ভাটার সময় নদীর প্রশস্ততা ৫২০ মিটার কমে গেছে। বেশির ভাগ জায়গায় গভীরতা স্থানভেদে ২ থেকে ১৩ দশমিক ৬ ফুটে গিয়ে ঠেকেছে। আবার কোথাও সর্বোচ্চ ৭৮ ফুট পর্যন্ত পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের জরিপ সমীক্ষায় এ চিত্র উঠে এসেছে। সংগঠনটি গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে নদীতে সর্বশেষ সমীক্ষা চালায়। আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সমীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান লিখিত বক্তব্যে নদীর বিভিন্ন স্থানের গভীরতা ও প্রশস্ততা তুলে ধরেন। তাতে দেখা যায়, ২০০০ সালে কর্ণফুলী সেতুর কাছে নদীর প্রস্থ ছিল ৯৩০ মিটার, তা বর্তমানে রয়েছে ৪১০ মিটার। ফ্যাদোমিটারের মাধ্যমে ভাটার সময় নদীর গভীরতা পরিমাপ করা হয়। তাতে চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট থেকে উত্তর পাশে গভীরতা পাওয়া যায় ২৫ ফুট। চাক্তাই খালের মোহনায় নদীর গভীরতা মিলেছে মাত্র দুই ফুট। ওই জায়গায় চর জেগেছে। রাজাখালী খালের মোহনায় পাওয়া গেছে চার ফুট। কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর ৩ নম্বর পিলারের কাছে গভীরতা প্রায় ৬১ ফুট। আবার ৫ নম্বর পিলারের কাছে গভীরতা ৭৮ ফুট পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অপরিকল্পিত খনন এবং চাক্তাই খালের মাছ বাজারকে নদীর অংশ ইজারা দেওয়ার কারণে নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা কমেছে। নদীর প্রবাহের এলাকা কমে যাওয়ার কারণে সেতুর পিলারের নিচে নদীর তলদেশের মাটিতে ছোট–বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এটা সেতুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া কয়েকটি পিলারের গোড়ার মাটি সরে যাচ্ছে বলেও তাঁরা জানান।

কর্ণফুলী রক্ষায় পরিকল্পিত খনন করা, নদীকে অবৈধ দখলমুক্ত করা, ইজারাদান বন্ধ করা, ময়লা–আবর্জনা না ফেলাসহ নানা সুপারিশ করেছে নদী রক্ষা আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে জীববৈচিত্র্য গবেষক অধ্যাপক নোমান আতমদ ছিদ্দিকী, নদী গবেষক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, গবেষক মনোজ কুমার দেব, সংগঠনের সদস্য পেয়ার আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের সহআয়োজক ছিল বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম ও সৃষ্টি।