করোনা রোগীর স্বজনদের সামলাতে সাংসদের সহযোগিতা চায় কর্তৃপক্ষ

নাটোর সদর হাসপাতালের প্রধান ফটক।
ফাইল ছবি

নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা রোগীদের সংস্পর্শে থাকা স্বজনদের অবাধে চলাফেরায় উদ্বিগ্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতি সামলাতে তারা স্থানীয় সাংসদ ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল পর্যন্ত নাটোর সদর হাসপাতালের রেড জোনে ৪২ জন ভর্তি আছেন। এ ছাড়া ইয়েলো জোনে আছেন আরও ২০ জন। বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯৫২ জন। হাসপাতালে থাকা রোগীদের সংস্পর্শে আছেন তাঁদের শতাধিক স্বজন। বিভিন্ন অজুহাতে তাঁরা যখন-তখন রোগীর কাছে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন না। পাশে বসে রোগীকে খাওয়াচ্ছেন, কথা বলছেন। আবার যখন-তখন চিকিৎসক ও নার্সদের কক্ষে ঢুকে পড়ছেন। সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করতে বললে বা রোগীর সংস্পর্শে যেতে বাধা দিলে হাসপাতালের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটছে। আবার ওই ব্যক্তিদের মাধ্যমে হাসপাতালের অন্য রোগী, তাঁদের স্বজনেরা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। শুধু চলতি মাসেই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ সাতজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

সদর হাসপাতালের উপপরিচালক পরিতোষ কুমার রায় বলেন, ‘রোগীর স্বজনদের মৌখিকভাবে নিষেধ করে কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং তাঁরা ঝগড়ায় জড়াচ্ছেন। বাধা দিতে গিয়ে একজন শিক্ষানবিশ নার্স শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। নিরুপায় হয়ে আমি নাটোর-২ আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি।’

সাংসদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্বেগকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পরিস্থিতি সামলাতে দলীয় নেতাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রোগীকে হাসপাতালে রাখা যাবে না।’

এদিকে শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার আটটা পর্যন্ত জেলায় ৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে নতুন করে ২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫৯৫ জনে। শুক্রবার রাতে সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়দেব চন্দ্র (৪২) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।

জেলার সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান বলেন, করোনার বিস্তার ঠেকাতে নাটোরে চলমান কঠোর লকডাউনের ১১তম দিন আজ শনিবার। শহরে মানুষের তেমন জটলা নেই। তবে লোকজনের চলাচল থেমে নেই। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। ফলে উপজেলাগুলোতেও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এখনই সতর্ক না হলে ক্রমেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে সতর্ক করে দেন তিনি।