পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের রহমতপুর এলাকার সত্তরোর্ধ অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক এবং উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ফুলবুনিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ বাসিন্দা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার সময় উত্তরার কুয়েত–মৈত্রী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্কুলশিক্ষক মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর স্ত্রীও (৬০) কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া ফুলবুনিয়া গ্রামের ওই ব্যক্তি বরিশাল শহরের বাসভবনে গতকাল মধ্যরাতে মারা যান।
স্কুলশিক্ষকের পারিবারিক সূত্র জানায়, তাঁর সর্দি-কাশি ছিল। প্রথমে তিনি কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এরপর ৬ জুন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা পজিটিভ আসে। এরপর ৮ জুন তাঁদের দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার উত্তরার কুয়েত–মৈত্রী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর নেন। এরপর তিনি সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি কলাপাড়া পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর দুই ছেলেই চিকিৎসক। তাঁর বড় ছেলে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ও মেজ ছেলে ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম সিকদার জানান, ফুলবুনিয়া গ্রামের ওই ব্যক্তি বরিশাল শহরের বাসভবনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তাঁর সর্দি-কাশিসহ শারীরিক অসুস্থতা ছিল।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ‘আমাকে মুঠোফোনে দুজনেরই মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দাফন কাজে যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের ইতিমধ্যেই আমি জানিয়েছি। আমার চিকিৎসকসহ মাঠকর্মীদের দাফনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের এলাকা লকডাউন (অবরুদ্ধ) করেছিলাম। এখন আরও কঠোরভাবে ওই সব এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা লকডাউন করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী মারা যাওয়া ব্যক্তির একজনকে কলাপাড়া পৌর শহরে এবং অন্যজনকে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ফুলবুনিয়া গ্রামে দাফন করা হবে। ইতিমধ্যে সে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’