মোট ২ হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে ৯৩টি নমুনা কম পরীক্ষা হয়েছে।
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন মারা গেছেন। একই সময় বিভাগে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ৯৪৫ জন। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু কমেছে। তবে আক্রান্ত বেড়েছে। নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হারও অনেক বেড়েছে।
গতকাল রোববার ২৮ জনের মৃত্যু হয়। আর আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৭৬৩ জনের। আজ সোমবারের নতুন আক্রান্তসহ বিভাগে মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৫ হাজার ৯৭৭। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮৩৭। সুস্থ হয়েছেন ৩৪ হাজার ৬২৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩০৭ জন। আজ করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের নিয়মিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানান বিভাগীয় পরিচালক রাশেদা সুলতানা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ১০ জেলায় আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে ১ হাজার ৩৯৬টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেনে ৮৯৮টি এবং জিন এক্সপার্টের মাধ্যমে ৬৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। মোট ২ হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে ৯৩টি নমুনা কম পরীক্ষা হয়েছে। বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্তের হার চুয়াডাঙ্গায় ৫০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন খুলনায় ২৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি তিনজন করে মারা গেছেন খুলনা ও কুষ্টিয়ায়। এরপর ঝিনাইদহে মারা গেছেন দুজন। এ ছাড়া বাগেরহাট, যশোর, নড়াইল ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে মারা গেছেন।
বিভাগে করোনায় মোট মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে খুলনা জেলায় ২১১, কুষ্টিয়ায় ১৫৭, যশোরে ১০৯, চুয়াডাঙ্গায় ৭৪, ঝিনাইদহে ৬৮, বাগেরহাটে ৬৬, সাতক্ষীরায় ৬২, মেহেরপুরে ৩৩, নড়াইলে ৩২ ও মাগুরায় ২৫ জন রয়েছেন। বিভাগে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৮২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে (আজ পর্যন্ত) ১১ হাজার ৬৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ১৯২ জন। এর আগের ২১ দিনে (১১-৩১ মে) শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ৩৪২ জন। ওই সময়ে মারা যান ৫৫ জন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর ২৫ শতাংশের বেশি শনাক্ত হয়েছে চলতি মাসের ২১ দিনে। আর মোট মৃত্যুর প্রায় ২৩ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে এই সময়ে।
বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বাগেরহাটে ৮৬, চুয়াডাঙ্গায় ৫৯, যশোরে ৩০৫, ঝিনাইদহে ৯৫, খুলনায় ১৭৫, কুষ্টিয়ায় ৮৩ মাগুরায় ২০, মেহেরপুরে ৩৪, নড়াইলে ৩৮ ও সাতক্ষীরায় ৫০ জন আছেন। বিভাগে এখন চিকিৎসাধীন (বাসায় ও হাসপাতালে) রোগী আছেন ১০ হাজার ৫১৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫১৪ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) ফেরদৌসী আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, নমুনা পরীক্ষা বেশি হলেই শনাক্ত বেশি হচ্ছে। শনাক্তের হারও খুবই ঊর্ধ্বমুখী। এদিকে বাজারে ঈদের ভিড়। কারও মুখে তেমন কোনো মাস্ক নেই, সামাজিক দূরত্ব কিছুই নেই। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে এভাবে চললে পরিস্থিতির উন্নতি কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।