বগুড়ায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া এক যুবক (২৪) তথ্য গোপন করে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে জন্ডিসের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর তাঁকে নন্দীগ্রাম থেকে আটক করে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার থালতা মাজগ্রাম ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর গ্রাম থেকে ওই ব্যক্তিকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দাড়িয়াপুর গ্রামের চারটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই যুবকের বাড়ি বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়। তবে তাঁর বাবা বগুড়া শহরের একটি হোটেলে কাজ করেন। আর ওই যুবক কাজ করেন ঢাকায় একটি মোজা কারখানায়। করোনার উপসর্গ নিয়ে ঈদের এক দিন আগে তিনি বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার তিনি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়ে আবারও চেলোপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে যান। সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে নমুনা পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন বলে তাঁকে জানানো হয়। পাশাপাশি বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতেই নন্দীগ্রাম উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে চাচার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, চাচার বাড়িতে গিয়ে তিনি করোনার তথ্য গোপন করে জন্ডিসে আক্রান্ত বলে বাড়ির লোকজনকে জানান। চাচার পরিবার তাঁর কথা বিশ্বাস করে পরদিন জন্ডিসের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে শুক্রবার দুপুরে নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হন দাড়িয়াপুর গ্রামে সেই বাড়িতে। তখন হইচই পড়ে যায় গোটা গ্রামে। প্রশাসনের লোকজনের কাছে করোনা পজিটিভ ওই ব্যক্তি তখনো দাবি করেন, তিনি জন্ডিসে আক্রান্ত রোগী। পরে তাঁকে আটক করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিক আমিন বলেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আইসোলেশনে করোনা ইউনিটে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করা হলেও তিনি করোনা ‘পজিটিভ’, তা এখনো স্বীকার করেননি। তিনি পরীক্ষার ফলাফল পাননি বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে ওই যুবকের করোনা শনাক্ত হয়েছে।