আট সদস্য কমিটির চারজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অনাস্থা জানিয়ে ছিলেন।
পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের দুই পক্ষের কোন্দলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সংগঠনটি। ২০১৮ সালের ৫ জুন নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত দুই পক্ষের বিরোধের কারণে জেলা কমিটি একটিও সভা করতে পারেনি। জেলা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে পদ–বাণিজ্য ও মারামারির অভিযোগ রয়েছে।
জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানজিল হাসান বলেন, জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গত সাড়ে তিন বছরে একটি সভাও ডাকেননি। তাঁরা নিজেদের ইচ্ছেমতো সংগঠন চালাচ্ছেন ও পদ–বাণিজ্য করছেন। সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান শেখের বিরুদ্ধে মাদক, যৌতুক ও ডাকাতির মামলা রয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ জুন হাসান আল মামুনকে সভাপতি ও বদিউজ্জামান শেখকে সাধারণ সম্পাদক করে আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। আট সদস্য কমিটির চারজন তখন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অনাস্থা জানিয়ে ছিলেন।
জেলা কমিটির নয়জন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় গঠনতন্ত্রে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটির কথা বলা হলেও পিরোজপুরে কমিটি করা হয়েছে ৩৪৯ সদস্যবিশিষ্ট। এ ছাড়া জেলা কমিটির মেয়াদ দুই বছর হলেও বর্তমান কমিটি সাড়ে তিন বছর পার করেছে।
জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ইমরান আহমেদ বলেন, সভাপতি ও সম্পাদক মূলত পদ–বাণিজ্য করতে তাঁরা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ৩৪৯ সদস্যবিশিষ্ট বিশাল কমিটি করেছেন।
জেলা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা বলেন, জেলা ছাত্রদলের দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সহসভাপতি তানজিল হাসান। অন্য পক্ষে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান। গত ১৯ নভেম্বর মঠবাড়িয়া পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব নাজমুল হাসান এবং ২১ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব শফিক রেজাকে সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শফিক রেজা বলেন, ‘আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বাবা আসলাম শেখ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। পরে ওই অডিও ফাঁস হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অডিও ফাঁসের ঘটনা নিয়ে সহসভাপতি তানজিল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামানের মধ্যে মারামারি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসলাম শেখ বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিও আমার না।’ জেলা ছাত্রদলের সভাপতিকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান শেখ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী জেলার কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, মারামারি ঘটনায় দুই পক্ষ সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।