প্রজাতন্ত্রের কোথাও উপজেলা প্রশাসন কথাটি লেখা নেই। রয়েছে উপজেলা পরিষদ। এমনকি ভবনের গায়েও লেখা রয়েছে উপজেলা পরিষদ। অথচ কর্মসূচি পালন করার সময় লেখা হয় উপজেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী জেলার মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই বক্তব্য তুলে ধরেন। সভায় বক্তারা বলেন, সংবিধানের নির্দেশনা ও আইনের আলোকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচিত। কতিপয় কর্মকর্তার নেতিবাচক মনোভাবের কারণে এক যুগেও স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যায় কার্যকর হয়নি।
উপজেলা পরিষদ কার্যকর করার দাবিতে আজ রোববার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয় এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, উপজেলা পরিষদ এখন মূলত অকার্যকর। প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা থাকলেও কতিপয় কর্মকর্তাদের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আর এই কারণে দেশের উপজেলা পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশীদার হতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে উপজেলা পরিষদকে কার্যকর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদকে কার্যকরের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁদের কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। অথচ তৃণমূলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত শাসনব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণের শাসন বাস্তবায়ন হবে এবং এর মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন, বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা, মোহনপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলার নারী ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যানরা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা উস্কানি দিয়ে পরিবেশ নষ্ট করতে চান না। চাইলে যখন–তখন ৫–১০ হাজার মানুষ নিয়ে উপজেলায় সমাবেশ করতে পারেন, কিন্তু তাঁরা তা না করে একটি ছোট্ট কক্ষের ভেতরে মতবিনিময় করছেন। তাঁরা সমন্বয়ের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করতে চান। সভায় বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের পাঁচ দফা দাবির কথাও আলোচিত হয়।
এ দাবি আদায়ের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য সভায় রাজশাহী উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের ২৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এতে সভাপতি পদে মোহনপুরের আবদুস সালাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে গোদাগাড়ীর উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে নির্বাচিত করা হয়।