করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘোষণা দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজেও ঘোষণাটি প্রচার করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন করা হলো। লকডাউনের আওতায় কক্সবাজারের কোনো উপজেলার লোকজন যেমন অন্য উপজেলায় যাতায়াত করতে পারবেন না, তেমনি জেলার মানুষও অন্য কোনো জেলায় যেতে পারবেন না। অন্য কোনো জেলার মানুষও কক্সবাজারে ঢুকতে পারবেন না। এ জন্য আজ থেকে সড়ক, নৌ ও আকাশপথ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এ আদেশ অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোহিঙ্গা শিবিরও লকডাউন
জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরকেও লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, আগে থেকেই রোহিঙ্গা শিবিরে লোকসমাগম, সভা-সমাবেশ, বিদেশি নাগরিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিবিরে কর্মরত দেশি–বিদেশি সংস্থা ও এনজিও কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। এখন তা আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। একটি শিবিরের রোহিঙ্গারা ইচ্ছা করলে অন্য শিবিরে যাতায়াত করতে পারবে না। যখন-তখন রোহিঙ্গারা হাটবাজারে যেতে পারবে না। তবে রোহিঙ্গাদের ঘরে থাকতে এবং নিরাপদে খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা নজরদারি করছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আট লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়। এর আগে আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা সাড়ে ১১ লাখ।
কক্সবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ নেই বলে দাবি করেন জেলা সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কারও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ১ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনা–আক্রান্ত রোগীদের জন্য রামু ও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০০ শয্যার পৃথক দুটি আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হলেও সেখানে কেউ ভর্তি নেই।