ওবায়দুল কাদের তাঁর ভাইকে ‘বাঘের চেয়েও বেশি ভয়’ পান, বললেন সাংসদ একরামুল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তাঁর ভাই আবদুল কাদের মির্জা ও সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী
ছবি কোলাজ: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী বলেছেন, ওবায়দুল কাদের তাঁর ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে ‘বাঘের চেয়েও বেশি ভয়’ পান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

প্রায় কাছাকাছি সময়ে কবিরহাট জিরো পয়েন্ট ও নোয়াখালী জেলা শহরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভা করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে বছরখানেক আগেও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে থাকা একরামুল করিমকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সে জন্য নিজের গ্রামের বাড়িতেই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সাংসদ একরামুল।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া একরামুল করিম চৌধুরীর বক্তব্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন অনেক অনুসারী। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কোম্পানীগঞ্জে মার্কা (দলীয় প্রতীক) দেয় নাই। কিন্তু কবিরহাটে কেন দেওয়া হলো? কারণ একটাই—কবিরহাটের মানুষ ভালো। কোম্পানীগঞ্জের মতো মির্জা (আবদুল কাদের মির্জা) নেই এখানে। ভাইকে বাঘের চাইতেও বেশি ভয় পায়।’

ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীকে নিয়ে কাদের মির্জার বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘একজন ভাবি মায়ের মতো। সেই ভাবিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বক্তব্য রাখা হইছে। এটা কি পৃথিবীর মানুষ দেখে নাই? কোনো বিচার নাই? আমি শুধু একটু বলেছি “ওই (রাজাকার) পরিবারের” লোক। বাহ! আমার সাধারণ সম্পাদকগিরি বাদ! কত দিন আপনি বাদ রাখবেন? রাখেন। মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়ায়, মানুষের যখন মাথায়... তখন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। এখন মানুষ আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য রেডি হচ্ছে।’

কবিরহাটবাসীর উদ্দেশে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কবিরহাটের একজন নেতৃত্ব চাই। আমরা সারা জীবন কি তাঁদের (কাদের পরিবার) গোলামই থাকব? পরিবার একটা পুরো বাংলাদেশ কাঁপাই দিয়েছে। আমাকে প্রধানমন্ত্রী হাত বেঁধে দিয়েছে। উনি আমার কাছে খবর পাঠিয়েছেন। আমি যেন একটা কথাও ওদের বিরুদ্ধে না বলি। আমি বলবও না।’

সাংসদ একরামুল করিম বলেন, ‘আজকে কবিরহাটে আওয়ামী লীগ তিন ভাগে বিভক্ত। নেতৃত্ব যদি ঠিক না থাকে। কবিরহাটের মানুষ কেন যাবে আপনাদের কাছে? খালি এমপিগিরি করার জন্য ঢাকায় বসে থাকলে তো হবে না। আমার এলাকার মানুষ আমাকে দেখলে যে মনঃশক্তি পাবে, তাঁর সংসারেও সে মনঃশক্তিটা কাজে লাগবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানো সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার কর্মী। যাঁরা আমাকে সরাইতে চাইছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আপনারাও থাকেন কি না, এটা আমাদের দেখার বিষয়। বেশি বাড়াবাড়ি ভালো নয়। আপনারা ভারপ্রাপ্ত। কয়েকজন ফোন করে বলে, মাইজদীতে এক হাজার লোক হয় নাই। ওবায়দুল কাদেরের কোনো প্রোগ্রামে যদি মাত্র এক হাজার লোক হয়, এটাতো আমাদের জন্যও লজ্জার ব্যাপার!’

বক্তব্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাড়িতে বিশেষ কোনো কর্মসূচি ছিল না। ঈদ উপলক্ষে দলের নেতা-কর্মীরা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসেছিলেন। তাঁদের উদ্দেশে কিছু কথা বলেছেন।