বড় ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা এ প্রশ্ন তোলেন। তিনি প্রায় ৩০ মিনিট লাইভে বক্তব্য দেন। কিছুক্ষণ পর ফেসবুক থেকে ভিডিওটি সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে অনেকেই সেটি সংগ্রহে রেখেছেন।
লাইভে আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের নীতি-নৈতিকতা ছিল। আজকে তাঁর স্ত্রীর (ইশরাতুন্নেসা কাদের) কিছু কথার কারণে তিনি নিজের বিবেকের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। আজকে দেখেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব এখানে (কোম্পানীগঞ্জে) একটা জিনিস প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, জাসদ দিয়ে পরিচালনা করবে আওয়ামী লীগ। আমি না থাকলে জাসদ দিয়ে চালাবেন। জাসদের খিজির হায়াত (বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি) ৭১ সালে যুদ্ধের সময় ওবায়দুল কাদের সাহেবকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। আর এখন তাঁদের ষড়যন্ত্রের চোরাবালিতে পা দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।’
কাদের মির্জার ভাষ্য, ‘মামুদুর রহমান বেলায়েত সাহেব আমাদের নেতা, নোয়াখালীর সবচেয়ে ত্যাগী নেতা। তিনি নীতি-নৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব তাঁকে পছন্দ করেন না। খিজির হায়াত যখন কাদের সাহেবকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন, তখন বেলায়েত সাহেব তাঁকে নিজের আশ্রয়ে রেখেছেন স্নেহ-মমতা দিয়ে। সেই বেলায়েত ভাইকে আজকে তিনি পছন্দ করেন না। কাদের সাহেবকে রাজনীতিতেও এনেছেন বেলায়েত সাহেব। আজকে তিনি তাঁকে চেনেন না, পছন্দ করেন না।’
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা নাকি ভাই, রক্ত। রক্ত আমরা নই। উনার (ওবায়দুল কাদের) রক্ত হচ্ছেন স্বপন মিয়াজী (ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম), নিজাম হাজারী (সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী), একরাম চৌধুরী (সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী), বাদল (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান) আর রাহাত (ভাগনে ফখরুল ইসলাম)। যাঁরা অপকর্মের হোতা, রক্ত তাঁর তাঁরা।’
বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের শোকসভা করতে না দেওয়ার প্রসঙ্গে কাদের মির্জা বলেন, ‘মওদুদ সাহেব পৃথিবী থেকে চলে গেছেন। তাঁর সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মানসিকতা থাকা উচিত নয়। যাঁরা এই কাজটা করেছেন, কোম্পানীগঞ্জের শোকসভা বন্ধ করে দিয়ে মানুষের মনে আঘাত দিয়েছেন; তাঁদের জানাজায় কতজন মানুষ হয় দেখবেন।’
কাদের মির্জার লাইভের পর তাঁর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত পাল্টা লাইভে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘কাদের মির্জা আমাদের দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। আমি ওনাকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনি কার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন? আমেরিকাতে আপনার সঙ্গে কোন এজেন্সির বৈঠক হয়েছে? আপনি বিএনপির কার সঙ্গে ওইখানে বৈঠক করে সুপরিকল্পিতভাবে আজকে আওয়ামী লীগের, ওবায়দুল কাদেরের সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য মাঠে নেমেছেন?’
মামা কাদের মির্জার উদ্দেশে ভাগনে আরও বলেন, ‘গতকাল আপনি বলেছেন, আপনাকে নাকি সিএমএইচে নেওয়া হবে। আমি মনে করি পাগলের চিকিৎসা সিএমএইচে হয় না। পাগলের চিকিৎসা হয় পাগলা গারদে। প্রিয় নেতা ওবায়দুল কাদের ও প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে বলব, অবিলম্বে তাঁকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে তুলে নিয়ে যান। আপনারা তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’