১১ বছরের মেয়েকে নিয়ে বাগেরহাটের মোংলা থেকে খুলনায় চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন গৃহবধূ (২৮)। সঙ্গে তাঁর ভাগনেও (২৬) ছিলেন। মঙ্গলবার চিকিৎসকের সিরিয়াল না পাওয়ায় তাঁরা নগরের হাদীস পার্কসংলগ্ন সুন্দরবন আবাসিক হোটেলের দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। গভীর রাতে হোটেলকক্ষ চেকের নামে সেখানে ঢুকে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ করেন খুলনা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৪)। এ অভিযোগে বুধবার বিকেলে খুলনা সদর থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার পর আসামি এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার বিষ্ণুপুর গ্রামে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার খুলনায় চিকিৎসক দেখাতে এসে ওই দিন আর সিরিয়াল পাননি ওই গৃহবধূ। রাতটা হোটেলে থেকে পরদিন চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়িতে ফেরার কথা ভেবেছিলেন। সেই মতো খুলনা নগরের লোয়ার যশোর রোডের সুন্দরবন আবাসিক হোটেলে মেয়ে ও ভাগনেকে নিয়ে ওঠেন তাঁরা। ৩১৩ নম্বর কক্ষে গৃহবধূ তাঁর মেয়েকে নিয়ে এবং ৩০৮ নম্বর কক্ষে ভাগনে থাকেন। ওই দিন দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে হোটেলকক্ষের দরজায় জোরে জোরে শব্দ হয়। কে? জিজ্ঞেস করতেই পুলিশ এসেছে বলে জানান হোটেলের বয় গোলাম মোস্তফা (২৭)। গোলাম মোস্তফাকে সঙ্গে নিয়ে ৩১৩ নম্বর কক্ষের দরজায় নক করছিলেন ডিবির এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের কথা শুনে কক্ষ খুলে দেন গৃহবধূ।
দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে হোটেলের বয় গোলাম মোস্তফাকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলের ৩১৩ নম্বর কক্ষের দরজায় নক করেন ডিবির এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের কথা শুনে কক্ষ খুলে দেন গৃহবধূ।
এসআই জাহাঙ্গীর আলম গৃহবধূকে জিজ্ঞাসা করেন সঙ্গে থাকা মেয়েটি তাঁর কি না। এ সময় পুলিশ হোটেল বয়কে কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ করেন। এর আগে মেয়েকেও ধর্ষণের হুমকি দেন তিনি। পরে তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসেন। এ সময় এসআই জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
পরে গৃহবধূর ভাগনে বিষয়টি হোটেলমালিককে জানালে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার পর আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, হোটেলকক্ষে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।