প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ঈদ উপহার

‘এবার বাড়িতে ঈদ হবে’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সামিট গ্রুপের সহায়তায় দেওয়া ঈদ উপহার হাতে পেয়ে খুশি আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকা, রাজশাহী, ১৮ জুলাই।
ছবি: প্রথম আলো

জুয়েল রানা মাঠে কাজ করে সংসার চালায়। আবার সে পড়াশোনা করে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত আলোর পাঠশালায়। করোনায় কাজ না থাকায় সে ঈদের জন্য বাজার করতে পারেনি। পাঠশালা থেকে ঈদের উপহার পেয়ে সে জানায়, ‘দুঃসময়ে ঈদের আনন্দ দিল প্রথম আলো। এবার বাড়িতে ঈদ হবে।’

আজ রোববার প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সামিট গ্রুপের সহায়তায় আলোর পাঠশালা, রাজশাহীর ১৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ঈদের উপহার বিতরণ করা হয়।
উপহারসামগ্রীর মধ্যে ছিল দুই কেজি পোলাওয়ের চাল, দুই কেজি ময়দা, এক লিটার সয়াবিন তেল, এক কেজি মসুর ডাল, ৫০ গ্রাম গরমমসলা ও একটি করে মাস্ক।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সাবেক সভাপতি রহমান রাজু, রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমির জেলা সংস্কৃতি কর্মকর্তা ও নাট্যকার আসাদুজ্জামান সরকার, আলোর পাঠশালা-রাজশাহীর সভাপতি মাসুদ রানা, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী বন্ধুসভার বন্ধু মাহমুদুল ইসলাম প্রমুখ।

কাউন্সিলর আরমান আলী বলেন, প্রথম আলো যে সংবাদপত্রের চেয়ে একটু বেশি, তার প্রমাণ হচ্ছে এই ঈদের উপহার। তারা সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি শিক্ষাবিস্তারেও ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠিত আলোর পাঠশালায় অধ্যয়নরত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য তারা ঈদ উপহারের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, এই পাঠশালার যেকোনো ধরনের কাজে তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতা করে প্রথম আলোর স্লোগান যা কিছু ভালো তার সঙ্গে থাকতে চান।

আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, এই পাঠশালার শিক্ষার্থীরা সমাজের মানুষকে পথ দেখাবে। তারা যেভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে উপহারসামগ্রী নিচ্ছে, সমাজের মানুষ যদি আজ সব জায়গায় এ বিধি মেনে চলে, তাহলে বাংলাদেশ খুব অল্প সময়ের মধ্যে করোনামুক্ত একটি দেশ হতে পারে।

এ পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সন্ধ্যা খাতুনের বাবা রাজশাহীর চরের গ্রাম থেকে দুধ নিয়ে এসে রাজশাহী শহরে বিক্রি করেন। করোনাকালে বিধিনিষেধের মধ্যে মিষ্টির দোকানগুলো বন্ধ থাকায় তার বাবার দুধের ব্যবসা চলছে না। এখন তাদের সংসারই চলছে না। এরই মধ্যে আসছে ঈদ। সন্ধ্যার ভাষায়, প্রথম আলোর উপহারই তাদের বাড়িতে ঈদ আনবে।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাজল রেখার পরিবারের একই অবস্থা। চার ভাইবোন আর মা–বাবাকে নিয়ে তাদের সংসারে টানাটানি যায় না। বাবা দিনমজুর। তার রোজগার এখন ঠিকমতো হয় না। তারপরও তাকেই এই ছয় সদস্যের পেটের ক্ষুধা মেটানোর দায় বহন করতে হয়। তাই তো প্রথম আলোর ঈদের উপহারের আনন্দটাও তার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে।

পাঠশালার কিছু শিক্ষার্থী এখন চরখিদিরপুর থেকে নৌকায় করে আসে। নৌকা এসে ভিড়ে বিদ্যালয় মাঠে। তারা উপহারের ব্যাগ নিয়ে উঠে যায় নৌকায়। সে দৃশ্যও দেখার মতো।