বিবাহিত ছাত্রীদের সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেমা খাতুন ভাসানী হল কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করে হল প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
হল কর্তৃপক্ষ বলছে, হলে সিটের জন্য এবার অনেক বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তখন দেখা যায়, হলে অনেক বিবাহিত ছাত্রী রয়েছেন। তাঁরা সিট বরাদ্দ নিয়ে হলে নিয়মিত থাকেনও না। সিট ফাঁকা পড়ে থাকে। আবার কেউ কেউ সিটে অতিথিদের উঠিয়ে রেখেছেন। তাই তাঁদের সিট বরাদ্দ বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিবাহিত ছাত্রীদের আবাসিক হলের সিট বাতিল করার নিয়ম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও সম্প্রতি বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে দেওয়া এক আবেদনে পাঁচটি ছাত্রী হলের প্রতিনিধিরা বিবাহিত ছাত্রীদের ক্ষেত্রে থাকা নিয়মটি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানান। গত শুক্রবার নিময়টির বাতিল চেয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রীরা।
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেমা খাতুন ভাসানী হল শিক্ষার্থীরা জানান, হলের প্রাধ্যক্ষ ১১ ডিসেম্বর নোটিশ বোর্ডে বিবাহিত শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হলের নিয়ম অনুযায়ী বিবাহিত ছাত্রীদের হলে থেকে অধ্যায়নের সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বিবাহিত ছাত্রীদের সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হলো।’
কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে হল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। না জানালে নিয়ম ভঙ্গের কারণে জরিমানাসহ সিট বাতিল করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই নোটিশে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিবাহিত এক শিক্ষার্থী জানান, বিবাহিত-অবিবাহিত সবারই হলে থাকার অধিকার রয়েছে। এ ধরনের আইন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। হলে অনেক বিবাহিত শিক্ষার্থী রয়েছেন।
ওই হলের আবাসিক ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, অনেক মেয়েই আছেন, যাঁদের পড়াশোনা চলাকালেই বিয়ে হয়। তাঁরা বিয়ে হলেও হলে থেকেই নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যান। এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ায় বিবাহিত মেয়েদের লেখাপড়ায় সমস্যা হবে। হলে নিরাপদে কম খরচে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বাইরে থাকতে খরচ যেমন বেশি, নিরাপত্তাটাও অনেক কম। তাই বিবাহিত মেয়েদের হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ দিয়েছে, তা আর একবার ভেবে দেখা প্রয়োজন।
আলেমা খাতুন ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ রোকসানা হক বলেন, নিয়মটি নতুন করে বা হঠাৎ করে আসেনি। হল প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এ নিয়ম রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসরণ করেই এখানে এ নিয়ম করা হয়েছে। প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মটি প্রয়োগ করা হচ্ছে।