সিলেট নগর

এবার খোলা মাঠে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা

এই মাঠে হকারদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। লালদীঘিরপাড়, সিলেট নগর, ১৭ ডিসেম্বর
প্রথম আলো

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার থেকে শুরু করে জিন্দাবাজার এলাকার সড়কের ফুটপাত পুরোটা দখলে ছিল ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বা হকারদের। সিটি করপোরেশন দখলমুক্ত অভিযান চালানোর পরপরই আবার ফুটপাত দখলে চলে যেত। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও মহানগর ট্রাফিক পুলিশ যৌথ উদ্যোগে ফুটপাতের হকারদের পুনর্বাসন শুরু করেছে। এর আগে গত বুধবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নগরীর কেন্দ্রস্থলের সকল ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।

গতকাল সকাল থেকে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে তাঁদের ব্যবসার জন্য নগর ভবনের পেছনে লালদিঘিরপার এলাকার খোলা মাঠকে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলে। প্রাথমিকভাবে সহস্রাধিক হকারের পুনর্বাসন করা হবে সেখানে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদের উপস্থিতিতে এ কার্যক্রম চলছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, ফুটপাত দখলে থাকায় নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাতেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সিটি করপোরেশনের হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগে একাত্ম হয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। এখানে কারা পুনর্বাসিত হবে, সে বিষয়টি ফুটপাত পর্যবেক্ষণ করে সিটি করপোরেশন নির্ধারণ করছে। আপাতত ১ হাজার ৭০ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লালদিঘিরপার এলাকার খোলা মাঠজুড়ে যেন উৎসবের আমেজ। বাঁশের খুঁটি গেড়ে তাতে সুতা বেঁধে দোকানের লাইন ও সীমানা চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাইকে ডেকে ডেকে হকারদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। সেখানে স্থান পাওয়া হকাররা তাঁদের পসরা সাজাতে ব্যস্ত। আর মাঠে জায়গা পেতে ফুটপাতের ব্যবসা গুটিয়ে হাজির হয়েছেন অনেক হকার।

মোহাম্মদ দুলাল পাঠানের ব্যবসা ছিল জিন্দাবাজার এলাকায় শহীদ মিনারের সামনের ফুটপাতে। সেটি গুটিয়ে এখানে এসেছেন। দুলাল বলেন, ‘আমরা তো ব্যবসা করতে চাই। এখানে কাস্টমার এলে ব্যবসা ভালো হবে। ব্যবসা হলে আর কেউ ফুটপাতে যাবে না।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের দিকে একবার ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের তালিকা করে কয়েকটি ধাপে পুনর্বাসন করা হয়েছিল লালদিঘিরপার এলাকার এই খোলা মাঠেই। কিন্তু সেখানে ক্রেতারা না যাওয়ায় কেনাবেচা সংকটে পড়ে আবার ফুটপাতে ফিরে গিয়েছিলেন হকাররা।

প্রায় এক যুগ পর আবার একই স্থানে হকার পুনর্বাসনে আগের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ফুটপাত ছেড়ে মানুষ যেন নির্ধারিত স্থানে গিয়ে কেনাকাটা করেন, সে বিষয়টিও প্রচার করা হবে। এককথায় এই দফা হকার পুনর্বাসন ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না।

মেয়র আরও বলেন, তাঁর দুই মেয়াদে অসংখ্যবার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হয়েছে। যখনই অভিযান করেছেন, তখনই আগে পুনর্বাসনের দাবি উঠেছে। এ দাবির জন্য এই স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দফা যাতে যথাযথভাবে পুনর্বাসন করা হয়, সেদিকে কঠোর দৃষ্টি থাকবে।