স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক পরিষ্কার না করেই মাটি, ধুলাবালুর ওপর দিয়ে পিচঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে।
২০১৮ সালে সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। অর্ধেক কাজ করে ঠিকাদার কাজ ফেলে রেখে চলে যান। তিন বছর পর ১০ অক্টোবর সড়কের কাজ শেষ হয়। এর এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুরের কালিয়া ইউনিয়নের বানিয়ারসিট-শাপলারবাইদ পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ নিয়ে স্থানীয় লোকজন নানা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলেন, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কোনোভাবে জোড়াতালি দিয়ে সড়কের কাজ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশে কিছু স্থানে পিচঢালাই উঠে গেছে। স্থানীয় আবু হানিফ বলেন, একদম পাতলা করে পিচঢালাই দেওয়া হয়েছে। সড়কের পিচ হাত দিয়ে টান দিলেই ওপরের অংশ উঠে যাচ্ছে। পিচের নিচের দিকে মাটির প্রলেপ দেখা গেল। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সড়ক পরিষ্কার না করেই মাটি, ধুলাবালুর ওপর দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই সড়কের নির্মাণকাজে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ব্যবহার কম করায় ২ ট্রাক পাথর ও ১০ ড্রাম বিটুমিন রয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন বেশি হওয়া মালামাল ঠিকাদারকে ফিরিয়ে নিতে বাধা দিয়েছেন।
প্রতিবাদস্বরূপ স্থানীয় লোকজন নতুন সড়কের চারটি স্থানের কিছু অংশে পাতলা পিচ তুলে ফেলেছেন এবং সড়কের সেই অংশের ছবি ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্র জানায়, জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বানিয়ারসিট-শাপলারবাইদ এক কিলোমিটার সড়ক পাকা করার জন্য ২০১৭ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান ‘প্রাইম ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি ঠিকাদারি সংস্থা। ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারির মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা ছিল। ওই ঠিকাদারি সংস্থা ২০১৮ সালে ৫০ শতাংশ কাজ করে বাকি কাজ ফেলে চলে যান। এক মাস আগে ওই ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে কাজটি শেষ করার কথা বলে এলজিইডি। ১০ অক্টোবর ওই ঠিকাদার কাজটি শেষ করেন। এর মধ্যেই স্থানীয় লোকজন সড়কের কাজ নিয়ে নানা অভিযোগ দেওয়া শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, কাজে কোনো ধরনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। তবে কাজটি শেষ করতে তাঁর একটু দেরি হয়েছে। স্থানীয় লোকজন শাবল দিয়ে পিচঢালাই তুলে ফেলছেন। এটা তাঁরা করতে পারেন না। এ কাজ করতে গিয়ে তাঁর উল্টো লোকসান হয়েছে। কারণ, বর্তমানে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ৯০ লাখ টাকা খরচ হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী হাসান ইবনে মিজান বলেন, কোনো সমস্যা হলে ওই সড়ক সংস্কার করে দেওয়া হবে। তবে ওই সড়কের যে স্থানে স্থানীয় লোকজন পিচঢালাই তুলে ফেলেছেন, সেগুলো সংস্কার করতে কর্মী বাহিনী (নির্বাহী প্রকৌশলীর ভ্রাম্যমাণ শ্রমিক দল) পাঠানো হয়েছে। যথাসময়ে কাজ না করায় এ সমস্যা হয়েছে। সময়মতো কাজ না করায় ওই ঠিকাদারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।