ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সেতুতে সাইন, সংকেত ও সীমানা দেয়ালের ওপর স্টিলের রেলিং বসানোর কাজ চলছে।
২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও শ্রমিকেরা। সেতু ও সেতুর দুই প্রান্তে চলছে শেষ সময়ের কাজ। সেতুর ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টে চার-পাঁচ দিনের মধ্যে আলো জ্বলবে। সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন সেতু বিভাগের প্রকৌশলীরা (বিদ্যুৎ)।
সেতু বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্র জানায়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘে৵র পদ্মা সেতুতে ৩২৮টি ও দুই প্রান্তের ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার উড়ালপথে (ভায়াডাক্ট) ৮৭টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার আলোকিত করতে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল ল্যাম্পপোস্টগুলোতে বাতি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এরপর তাতে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার জন্য কেব্ল লাগানোর কাজ শুরু করা হয়। যা শেষ হতে আরও চার-পাঁচ দিন সময় লাগবে।
ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কেব্ল স্থাপনের পাশাপাশি সেতুতে সাইন, সংকেত ও মার্কিংয়ের কাজ চলছে। সেতুর সীমানা দেয়ালের ওপর বসানো হচ্ছে স্টিলের রেলিং।
সেতু আলোকিত করতে জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর পিয়ারে সেতুর সাবস্টেশনে গত ২৪ মে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবস্টেশন থেকে ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের সংযোগ কেব্ল স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আটটি ফিডার স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে চারটি মেইন ফিডার ও ৪টি সাবফিডার রয়েছে। কেব্ল লাগানোর কাজ শেষ হলে সাবস্টেশন থেকে ফিডারে বিদ্যুৎ–সংযোগ নেওয়া হবে। তারপর ল্যাম্পপোস্টে সংযোগ নেওয়া হবে। এর পরেই পরীক্ষামূলকভাবে সেতুতে আলো জ্বালানো হবে।
পদ্মা সেতুতে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট ছাড়াও ‘আর্কিটেকচারাল লাইট’ জ্বালানো হবে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে, ঈদ ও পূজাসহ বিভিন্ন জাতীয় উৎসবের নকশা করে এসব লাইট জ্বালানো হবে। পিলারের পানির অংশ থেকে রোডওয়ে স্লাব পর্যন্ত সেতু ও ভায়াডাক্টে ওই লাইট অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জ্বালানো হবে। সেতু চালু হওয়ার পরে কোরবানির ঈদের আগে আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের কাজ শেষ করা হবে।
সেতু বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ–সংযোগ নেওয়া হয়েছে। ওই সংযোগ এখনো সেতুর ওপরে আনা হয়নি। ল্যাম্পপোস্টে কেবল লাগানোর কাজ চলছে। তা শেষ হতে চার-পাঁচ দিন সময় লাগবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পদ্মা সেতুর মূল সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে গত মাসে। যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি প্রস্তুত হওয়ায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরই সেতুটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের জন্য ম্যুরাল ও ফলক নির্মাণের কাজ চলছে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে। তার পাশে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে ফোয়ারা ও ইলিশের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। ট্রাকের ওজন পরিমাপ করার জন্য ওজন স্কেল নির্মাণ করা হচ্ছে।