শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ‘মৃত্যু অথবা মুক্তি’র স্লোগানে আলপনা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু‌ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদী আলপনা
ছ‌বি: প্রথম আলো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু‌ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে টানা ১৬৩ ঘণ্টা অনশন করেছিলেন যে শিক্ষার্থীরা তাঁদের উৎসর্গ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই আলপনা এঁকেছেন অন্য সহপাঠীরা। ‘মৃত্যু অথবা মুক্তি’ শিরোনামে আঁকা এ প্রতিবাদী আলপনার কাজ শুরু করেন গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে, যা শেষ হয় মধ্যরাতে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন থেকে সরে এলেও উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ শুক্রবার আন্দোলনের ১৬তম দিন।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়কে আঁকা এ আলপনায় ‘মৃত্যু অথবা মুক্তি’ লেখার ওপর এক‌টি স্ট্যান্ডে স্যালাইন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আলপনা আঁকায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগ দা‌বি আদায় করতে যে ২৮ শিক্ষার্থী জীবন বা‌জি রেখে অনশনে নেমে‌ছিলেন, তাঁদের সম্মান জানাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময় ক্যাম্পাসের বি‌ভিন্ন জায়গায় এমন প্রতিবাদী আলপনা আঁকা হবে।

১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর পর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষক একাধিকবার শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তাঁরা তা প্রত্যাখান করেছিলেন। এমনকি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত কয়েক শ শিক্ষার্থী ‘সম্মিলিত অনুরোধ’ জানিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে সরে আসার অনুরোধ জানালে তাঁরা সে আহ্বানও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে অনশন শুরুর ১৬৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।