আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সারা দিন মিথ্যা কথা বলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। দুই মাস আগে তাঁর কাছে করা ওয়াদার একটিও ওবায়দুল কাদের পূরণ করেননি বলেও অভিযোগ কাদের মির্জার।
আজ শুক্রবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে আবদুল কাদের মির্জা এসব কথা বলেন। ২০ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের লাইভে তিনি বড় ভাই ওবায়দুল কাদের, ভাবি ইশরাতুন্নেসা কাদেরসহ বিভিন্নজনের বিষয়ে কথা বলেন। ইশরাতুন্নেসার নির্দেশে পুলিশ খালের জায়গার অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে বাধার সৃষ্টি করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘পুলিশের প্রতি অনুরোধ করব। আপনারা সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের অভিযানে বাধার সৃষ্টি করবেন না কারও টাকা খেয়ে। এগুলো বন্ধ করেন। নিরপেক্ষ থাকেন।’
জেলা পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে কাদের মির্জা বলেন, ‘এসপি সাহেব ও ওসি সাহেব কত কত টাকা খেয়েছেন? বলেন, সব ওপরের নির্দেশ। ওপরে কি ওবায়দুল কাদের নির্দেশ দিয়েছেন? দিতে পারেন। উনি তো সারা দিন মিথ্যা কথা বলেন। সারা দিন মিথ্যা কথা বলেন, মিথ্যুক। আমার কাছে দুই মাস আগে যে ওয়াদা তিনি করেছেন, একটাও পূরণ হয়নি। আর তাঁর গুণধর স্ত্রী দুর্নীতিবাজ ইশরাতুন্নেসা কাদেরের নির্দেশে আজ পুলিশ খালের জায়গার অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পথে বাধার সৃষ্টি করছে।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘আজ কোম্পানীগঞ্জে যে অবস্থা চলছে, এটা থেকে আমাদের নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। আন্দোলন করে আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে।’ তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান ও সাধারণ সম্পাদক নুর নবীকে দল থেকে অনেক আগেই রেজল্যুশন করে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে বাদলকে বিতাড়িত করা হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে।
ওবায়দুল কাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘মন্ত্রী বলেন, তাদের (কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ) সঙ্গে আমার ছয় মাসেও দেখা হয়নি, এক বছরেও দেখা হয়নি। এখন কি খেলা দেখালেন, মিনিস্টার সাহেব? ভানুমতীর খেল খেলছেন? সব চোখ নিয়ে ভাইচালি (দুষ্টুমি) করিয়েন না। আমনের (আপনার) খবর সবাই জানে। আপনার সকল তথ্য আমার কাছে আছে। ধমকি দিয়েন না। আমি জায়গামতো পৌঁছাব।’
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘আপনি কী মনে করছেন? বুড়াকালে কি ভিমরতি হইছে? নিজেকে বিলীন করে দিতে চান? এগুলো করলে এখানে কোম্পানীগঞ্জের মানুষ আপনার কবর রচনা করবে আগামী নির্বাচনে। আগামী নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগও পাবেন না। আপনার কবিরহাটেও আমরা অনুরূপ পরিবেশের সৃষ্টি করব। এগুলোর জবাব পরবর্তী নির্বাচনে আপনাকে দিতে হবে। পার পাওয়ার সুযোগ নেই।’
এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আবদুল কাদের মির্জা বসুরহাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে বসুরহাট পৌরসভার জিরো পয়েন্টে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কাদের মির্জার অনুসারী ৩০০-৪০০ নেতা–কর্মীর সমাগম ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।