বরিশালের উজিরপুরে নিখোঁজের চার দিন পর আট বছরের এক শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার হারতা ইউনিয়নের নাথারকান্দি গ্রামের একটি খাল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আজ দুপুরে ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত শিশুর নাম দিপ্ত মন্ডল। সে হারতা ইউনিয়নের কাজীবাড়ি গ্রামের দিপক মন্ডলের ছেলে ও নাথারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। দিপক মন্ডল আজ দুপুরে বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হারতা বন্দরের একটি সেলুনের মালিক রতন বিশ্বাস (৪২), তাঁর স্ত্রী ইভা মল্লিক (৩৫) ও সেলুনের কর্মচারী নয়ন শীল। মামলার আরেক আসামি রতন বিশ্বাসের ভাই জীবন বিশ্বাস পলাতক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তিন আসামি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিপক মন্ডলের সঙ্গে রতন বিশ্বাসের পূর্ববিরোধ রয়েছে। গত ২৭ মে সন্ধ্যায় দিপ্ত মন্ডল তাঁর বাবা–মায়ের সঙ্গে হারতা বাজারে একটি অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে যাওয়ার পর দিপ্ত মন্ডল নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোনো সন্ধান না পেয়ে ২৮ মে দিপক মন্ডল উজিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে পুলিশ নিখোঁজ শিশুর পরিবারের কাছ থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে।
এরপর গতকাল রাতে পুলিশ রতন বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী ইভা মল্লিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রতন ও তাঁর স্ত্রী দিপ্ত মন্ডলকে অপহরণ করে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে, পুলিশ আজ সকালে নাথারকান্দি গ্রামের একটি খাল থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ সেলুনের কর্মচারী নয়ন শীলকেও গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শেদ বলেন, আসামিরা দিপ্ত মন্ডলকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দী করে তিন দিন সেলুনের ভেতরে বাথরুমে ফেলে রেখেছিলেন। পরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় তাঁরা গতকাল বস্তাবন্দী লাশ মাছের ড্রামে ভরে খালে ফেলে দেন।
ওসি আলী আর্শেদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি আক্তারুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন মো. শাহ জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।