ঈদুল আজহার আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক যানবাহন পারাপার হয়েছে। এই সেতু উদ্বোধনের পর ২০ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর ফলে এক দিনেই ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৩১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-উত্তরাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল-ঢাকার দিকে ৪৮ হাজার ৩২১টি যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে ঢাকা থেকে উত্তরের দিকে গেছে ৩২ হাজার ৮৫টি এবং উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকার দিকে যায় ১৬ হাজার ২৩৬টি যানবাহন। গত বছরে ঈদুল আজহার আগে একই সময়ে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ২৪৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল ।
বিবিএর টোল আদায় ব্যবস্থাপনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান নাসির ঈদের আগের দিন বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদুল আজহার সময় যে টোল আদায় হয়েছে, সেটি সেতু নির্মাণ হওয়ার পর সর্বাধিক। শুধু ঈদের আগের দিন শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর ওপর দিয়ে ৪৮ হাজার ৩২১টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে।
বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এবারের ঈদযাত্রায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও ঈদে ঘরমুখী মানুষের চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁদের মধ্যে ছিল না তেমন সচেতনতা। গাদাগাদি করে বাস-ট্রাকে চেপে বাড়ি ফিরেছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। তবে যানজট ও দুর্ভোগের সড়ক হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের ঢাকা-হাটিকুমরুল-রাজশাহী এবং পাবনা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে এবার যানজট ছিল না। তাই নির্বিঘ্নে যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করতে পেরেছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন জানান, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের ২৫০ জন সদস্য জেলার ১০২ কিলোমিটার মহাসড়কজুড়ে তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতি শিফটে মহাসড়কেই অবস্থান করেছে ১৮টি প্যাট্রল টিম, ৬টি গাড়ি, ১৩টি মোটরসাইকেল দল ও ৩টি তদারকি দল। এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশ কাজ করেছে, এখনো করছে।
বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া উপবিভাগীয় পুলিশ সুপার শহিদউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার প্রভাবে মানুষ কম চলাচল করবে, যার কারণে মহাসড়কে যানবাহন কম চলবে—আমাদের এমন ধারণা বদলে দিয়েছে।’ তিনি জানান, এবার শুধু ঈদের আগের বুধবার সিরাজগঞ্জের দুটি মহাসড়ক দিয়ে ৩৫ হাজার ৮৫৫টি যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। সিরাজগঞ্জের দুটি মহাসড়কসহ বগুড়া ও রংপুরের মহাসড়ক পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশের ৬৫০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন।