ঈদের ছুটির সময় ডেঙ্গু আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় লোকজনের সম্ভাব্য আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার কারণে এই ঝুঁকির কথা বলছেন চিকিৎসকেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গত ২৭ জুলাই ঢাকায় তাঁর দপ্তরে জ্বর নিয়ে কাউকে ঢাকা না ছাড়ার পরামর্শ দেন।
চট্টগ্রামে গতকাল শনিবার নতুন করে ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৩ জনে। ডেঙ্গু রোগীদের মশারির ভেতরে রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছেন চিকিৎসকেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে। কারণ, ডেঙ্গু রোগীকে কোনো এডিস মশা যদি কামড় দিয়ে পুনরায় অন্য কাউকে কামড় দেয় তাহলে তারও ডেঙ্গু হবে। ঢাকায় আসা–যাওয়া ছাড়াও স্থানীয়ভাবেও কিছু কিছু ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, চট্টগ্রামে যেসব ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ঢাকায় আসা–যাওয়ার কারণে আক্রান্ত। স্থানীয়ভাবে এডিস মশার কামড়েও ডেঙ্গু হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গু সারা বছরের রোগ। কিন্তু বর্ষাকালে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ার কারণে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এরই মধ্যে চট্টগ্রাম নগর ছাড়াও চন্দনাইশ, পটিয়া, বোয়ালখালী, সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে গতকাল চট্টগ্রামে এক সেমিনারে কথা বলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. আবদুর রব। তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার বিস্তার রোধ করতে হবে। পাশাপাশি রোগীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাহলেই কেবল ডেঙ্গু ছড়ানোর ঝুঁকি কমে যাবে। একটি ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা ডিম পাড়লে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
ঈদের সময় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি বলে মনে করছেন এই চিকিৎসক। এ সময় ডেঙ্গু নিয়ে জেলা থেকে উপজেলায় গেলেও এই রোগ ছড়ানোর শঙ্কা বেশি থাকবে বলে আবদুর রব মনে করেন।
সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার নাথ। তিনি বলেন, জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। সব জ্বর ডেঙ্গু নয়। তারপরও ডেঙ্গু নিশ্চিত হওয়ার পর এক জায়গায় থাকা উচিত। এতে এর বিস্তার ঠেকানো সম্ভব।
জেলা সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে ঈদে জ্বর নিয়ে কাউকে বাড়ি ঘরে যেতে নিষেধ করেছেন। এটি মানা হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।