ইতালি পাঠাতে চেয়ে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন, দুই দালাল গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার এক যুবককে ইতালিতে পাঠানোর প্রলোভন দিয়ে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন ও পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা–পুলিশের সহযোগিতায় রোববার সকালে কুষ্টিয়া থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন কুষ্টিয়ার নৃসিংহপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন (৬০) ও আবদুর রহমান (৩৭)। পুলিশ বলছে, তাঁরা দুজনই আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী একটি চক্রের সদস্য। লিবিয়ায় দালাল চক্রের হাতে জিম্মি থাকা যুবক হলেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া দোগাছি গ্রামের মৃত কবেজ উদ্দীন প্রামাণিকের ছেলে মো. বাবু মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় বাবুর ভগ্নিপতি আহসান হাবিব বাদী হয়ে তিন দালালের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শনিবার দুপচাঁচিয়া থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী বাবু মিয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দালাল চক্র বাবু মিয়াকে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় মানব পাচারকারী চক্রের বাংলাদেশি দুই সদস্য কালাম ব্যাপারী ও এমদাদুল হকের সঙ্গে। তাঁরা লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে দালাল চক্রের বাংলাদেশি সদস্যদের মাধ্যমে বাবুর পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তিন সপ্তাহ আগে বাবু মিয়াকে জিম্মি করে লিবিয়ার একটি স্থানে আটকে রেখে নির্যাতন করে আরও আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

২৯ অক্টোবর বাবু মিয়া বাংলাদেশে তাঁর পরিবারকে ফোন করে জিম্মিদশা ও নির্যাতনের কথা জানান। এরপর বাবুর ভগ্নিপতি আহসান হাবিব দালাল চক্রের বাংলাদেশি সদস্যদের কাছে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের কিছু টাকা পরিশোধ করেন। তাতেও বাবু মিয়াকে মুক্তি না দিলে আহসান হাবিব দুপচাঁচিয়া থানায় মামলা করেন। এরপর রোববার নৃসিংহপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু হাসান প্রথম আলোকে বলেন, লিবিয়ায় বসে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র নিয়ন্ত্রণ করছেন কালাম ব্যাপারী ও এমদাদুল হক। চক্রটির সঙ্গে যোগাযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের অর্থ আদায় করতেন কুষ্টিয়ার আলমগীর ও আবদুর রহমান। এর মধ্যে একজন কয়েক দিন আগে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। গ্রেপ্তার দুজনই আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার আদালতে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। ওসি আরও বলেন, চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।