তেল, গ্যাস, পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শরীয়তপুরে জেলা বিএনপির নির্ধারিত সমাবেশ করতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। বাধার মুখে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম তালুকদারের শহরের বাড়িতে জড়ো হন কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলার নেতা-কর্মীরা। সেখানে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
শামা ওবায়েদ বলেন, সমাবেশ আয়োজন করায় পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে, ভয় দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ মহড়া দিয়ে হামলা করে সমাবেশস্থলে যেতে বাধা দিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এমন আচরণ ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী সরকারের চরম উদাহরণ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ইশতেহার দিয়েছিল ১০ টাকা মূল্যে চাল খাওয়াবে, ঘরে ঘরে যুবকদের চাকরি দেবে, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম বন্ধ করবে। কিন্তু গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ তার উল্টোটা করেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ অসহায়। এমনকি যাঁরা আওয়ামী লীগের সমর্থক, ভোটার, তাঁরাও আজ অসহায়, কষ্টে আছেন।
শামা ওবায়েদ আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনে কে এল, কে থাকবে, সেটা বিএনপির মুখ্য বিষয় নয়। কারণ, গত ১৩ বছরে নির্বাচন কমিশনকে একটি মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ পরিণত করেছে। সুতরাং নির্বাচনের সময়ে কোন সরকার থাকবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী প্রকারে হবে, নিরপেক্ষ সরকার কীভাবে হবে, বিশেষ করে প্রশাসন কার অধীন থাকবে, সেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহম্মেদ আসলাম।
শফিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ মাঠে সমাবেশ করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারা সমাবেশ করতে দিতে রাজিও হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছিল পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতারা। সকালে আমাদের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সমাবেশস্থলে আমাদের যেতে দেয়নি। শহরজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিয়ে বিএনপির সমর্থকদের ধাওয়া করেছে।’
জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া-সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি কলেজ মাঠে সমাবেশ করার জন্য বিএনপি চিঠি দিয়েছিল, আবার আওয়ামী লীগ থেকে মার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো রাজনৈতিক দলকেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিএনপি নেতাদের অন্য স্থানে সমাবেশ করতে অনুরোধ করা হয়। তাই তারা এক বিএনপি নেতার বাড়িতে সমাবেশ করেছেন।