সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি লুৎফর রহমান। তিনি মামলার মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছে পুলিশ। এমন ব্যক্তি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, অষ্টম দফায় আগামী ১৫ জুন উপজেলার সোনাতনী ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছে। সেখানে নৌকা প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের নাম এসেছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে লুৎফর রহমানসহ ছয় নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় মামলা হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালে পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে লুৎফর রহমান ৩ নম্বর আসামি। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীদ মাহমুদ বলেন, ধর্ষণ মামলার এজাহারে লুৎফর রহমানের নাম ছিল না। তবে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তিনি ধর্ষণের ঘটনার মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পালাতে সহায়তা করেছেন। এ জন্য অভিযোগপত্রে তাঁর নাম রয়েছে।
লুৎফর রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সোনাতনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল হাসান মিয়া বলেন, লুৎফর রহমান যেন মনোনয়ন না পান, সে জন্য ৭ মে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়। তারপরও লুৎফর রহমান মনোনয়ন পেয়েছেন। এ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে তিনি দাবি করেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি একটি ঝগড়া ঠেকাতে গিয়েছিলাম। এ কারণে একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করেছে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস ছামাদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হয়ে কীভাবে নৌকা পেলেন, তা ভাবার বিষয়।’