সংসারে অভাব থাকলেও ছোট্ট মেয়ে শান্তা মনিকে কাজে দিতে রাজি ছিলেন না মা সীমা আক্তার। শেষে মেয়ের জোরাজুরিতে আর না করতে পারেননি। কিন্তু সেই মেয়ে এখন বেঁচে আছে কি না, জানতে পারছেন না মা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে কাজ করছিল শান্তা (১৪)। এখনো তার হদিস নেই। গতকাল ছিল তার কাজের দ্বিতীয় দিন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে অপেক্ষা করছেন সীমা আক্তার। শান্তা মনির যখন আট বছর, তখন তার বাবা জাকির হোসেন মারা যান। এরপর থেকে তিন ছেলে ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সীমার সংসার। ছেলেরা বিভিন্ন কারখানায় এবং নিজে তৈরি পোশাক কারখানার কাজ করেন।
সকালে তাড়াহুড়ো করার কারণে না খেয়ে কাজে চলে এসেছিল শান্তা। না খেয়ে আসায় মায়ের আক্ষেপের শেষ নাই। কান্না করতে করতে গলা ভেঙে যাওয়ায় কথা বলতে পারছিলেন না। বললেন, ‘বাবা মরা মেয়ে আমার। সকালের ভাত খেয়েও আসেনি। আমি শুধু মেয়ের লাশটা চাই।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ আগুন লাগে। আজ শুক্রবার দুপুরের পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। গতকাল রাতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তিনজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়া আজ ফায়ার সার্ভিস এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের লাশ উদ্ধারের খবর জানিয়েছে। লাশগুলো এতটাই পুড়ে গেছে, সেগুলো দেখে চেনা বা শনাক্ত করার উপায় নেই।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন জানান, ছয়তলা ভবনে প্রচুর প্লাস্টিক, কেমিক্যাল, কার্টনসহ প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন ভয়াবহ হয়ে ওঠে।