পায়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চলে যাওয়া সাত বছরের ফুটফুটে আফরিন মারা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সে মারা যায়। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাঁর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা দপ্তরের অফিস সহায়ক আজিজুল হক। বাড়ি মতিহার থানাধীন রামচন্দ্রপুর এলাকায়।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. শফিউল আলম শিশুটির মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে নগরের মতিহার থানায় শিশুটির দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার মামলা করেছেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ঘটনার পর ট্রাকচালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে গেছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে গতকাল সকালে বাবার সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাকচাপায় আফরিন আহত হয়। তার ডান পায়ের ওপর দিয়ে ট্রাকটি চলে যায়। পরে তৎক্ষণাৎ তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে যন্ত্রণায় ছটফট করছিল শিশুটি। পরে বিকেলে চিকিৎসকের পরামর্শে আফরিনকে অনুযায়ী ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়।
স্কুলের অধ্যক্ষ মো. শফিউল আলম বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী আজ বেলা ১১টার দিকে শিশুটির পা কাটা হয়। দুই ঘণ্টার মধ্যে শিশুটির অবস্থা খারাপের দিকে যায়। শিশুটিকে তখন সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে সে মারা যায়। তিনি বলেন, এটি দুর্ঘটনা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। স্কুল কর্তৃপক্ষ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।
বিকেল পাঁচটার দিকে আফরিনের বাবা আজিজুল হক বলেন, ‘আমার আদরের ধনকে বাঁচানো গেল না। অনেক চেষ্টা করলাম। ডাক্তার বলেছিল, পা কেটে ফেললে বাঁচানো যেতে পারে। আমার মেয়েটাকে বাঁচানো গেল না। বাচ্চাটা আর কোনো দিন স্কুলে যাবে না!’
বিকেলে আফরিনের স্কুলে গিয়ে তাঁর ছবি সংগ্রহ করা হয়। সেখানে আশুতোষ ব্যানার্জি আফরিনের ভর্তির কাগজপত্র বের করছিলেন। পেয়ে বললেন, লক্ষ্মী শিশুটিকে আর স্কুলে পাওয়া যাবে না।