তিনটি মরদেহ একে একে মর্গের ভেতরে ঢোকানো হচ্ছিল। শেষে যে লাশটি ঢোকানো হয়, সেটি ছয় বছরের শিশু রবিনের লাশ। লাশ দেখে হাউমাউ করে কাঁদছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর—হাসান। মারা যাওয়া রবিন ওই কিশোরের ভাগনে। ভাগনের নিথর দেহ দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে সে বলছিল, ‘আমার ভাগ্নেক মারলো ক্যা।’
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে হাসান ভাগনের জন্য কাঁদছিল।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে শহরের পিটিআই সড়কের মুখে তিনজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আসমা খাতুন, আসমার শিশু ছেলে রবিন ও শাকিল নামের এক যুবক। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পিস্তলসহ আসমার স্বামী সৌমেন রায়কে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আসমার পরিবার সূত্রে জানা যায়, শাকিলের সঙ্গে আসমার মুঠোফোনে পরিচয় এবং বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
মর্গের সামনে বসে কাঁদছিলেন নিহত আসমার মা হাসিনা খাতুন ও ভাই হাসান। হাসান পেশায় রিকশাচালক। কথা হলে সে বলে, তার বোনের আগে দুটি বিয়ে হয়েছিল। ভাগনে রবিন বোনের দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। পাঁচ বছর আগে পুলিশের এএসআই সৌমেনের সঙ্গে বোনের বিয়ে হয়। তার অভিযোগ, সৌমেন কয়েক মাস ধরে তার বোনকে নির্যাতন করতেন।
হাসানদের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায়। তবে তারা কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেট এলাকায় বাস করে। বোন আসমা ও ভাগনে রবিন তাঁদের সঙ্গে থাকতেন। আজ সকালে সৌমেন তার বোন ও ভাগনেকে বাসা থেকে বাইরে নিয়ে যান। পরে সে জানতে পারে, সৌমেন তার বোন ও ভাগনেকে গুলি করে মেরেছেন।
এএসআই সৌমেনের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার কসবা গ্রামে।