সিরাজগঞ্জ

আদালত প্রাঙ্গণে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে গাড়ি

চোরাই পথে আসা, নিবন্ধনহীন কিংবা মাদক মামলার আলামত হিসেবে এসব যানবাহন জব্দ করা হয়।

সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন মামলায় আটক মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার জেলার আদালত প্রাঙ্গণে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। গত সোমবার সকালে
ছবি : প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন মামলায় আটক শতাধিক মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার জেলার আদালত প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। আইনি জটিলতায় বছরের পর বছর পড়ে থাকার কারণে এসব যানবাহন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিত্যদিনের রোদ-বৃষ্টি-ঝড় আর ধুলায় এসব গাড়ির যন্ত্রাংশে মরিচা ধরেছে। ফলে কমে যাচ্ছে এর বাজারদর। আইনি জটিলতা থাকায় এসব গাড়ি নিলামে না তুলতে পারায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

আদালতের মালখানা সূত্রে জানা গেছে, চোরাই পথে দেশে আসা, নিবন্ধনহীন কিংবা অপরাধ–সংশ্লিষ্টতা, মাদক মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত যানবাহনগুলো পড়ে আছে দীর্ঘদিন। এসবের মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যাই বেশি। এ ছাড়া কয়েকটি প্রাইভেট কার পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব যানবাহন যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। সাত-আট বছর আগে আটক করা গাড়িও আছে এখানে, যার বেশির ভাগই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে সেখানে শতাধিক মোটরসাইকেল ও ছয়–আটটি প্রাইভেট কার পড়ে রয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে রাখা রয়েছে জব্দকৃত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার। সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে এসব মোটরসাইকেল (মামলার আলামত) খোলা স্থানে পরিত্যক্ত পড়ে রয়েছে। রোদ-বৃষ্টি আর ধুলার আস্তরণ দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা সচল আর কোনটা অচল। অযত্নে পড়ে থাকায় কিছু গাড়ির কাঠামো বা চেসিস ছাড়া অবশিষ্ট নেই কিছুই। সেগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

আইনজীবী কামরুল হাসান বলেন, মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত গাড়িগুলো পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে না রেখে একটি জায়গায় শেড নির্মাণ করে রাখলে তা–ও ভালো থাকবে। কিন্তু এসব গাড়ি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। এদিকে আদালতে প্রমাণস্বরূপ মামলার আলামত (যানবাহন) হাজির করতে না পারলে প্রকৃত অপরাধী ছাড়া পেয়ে যাবে।

জেলার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী পুলক কুমার বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অতি দ্রুত এই মামলাগুলো নিষ্পত্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আর যদি এই মোটরসাইকেল বা বাহনের কোনো মালিক না পাওয়া যায়, তাহলে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা রাখা উচিত। পরে যদি মালিক পাওয়া যায় তখন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহমান বলেন, চোরাই পথে দেশে আসা, নিবন্ধনহীন কিংবা অপরাধ–সংশ্লিষ্টতা, মাদক মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত যানবাহনগুলো পড়ে আছে দীর্ঘদিন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় এগুলো নিলামে বিক্রি করা যাচ্ছে না।

আদালতের মালখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, মালিকানা দাবি না থাকায় গত অর্থবছরে বেশ কিছু মোটরসাইকেল নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখন যে মোটরসাইকেলগুলো রয়েছে, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই।