নারায়ণগঞ্জে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী মিলে সৌদিপ্রবাসী জামাল হোসেনকে হত্যা করেছে। জামাল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁরা গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী মিলে সৌদিপ্রবাসী জামাল হোসেন (৫৪) নামের এক ব্যক্তিকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছেন। জামাল হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই তিনজন গতকাল বৃহস্পতিবার হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত জামাল হোসেনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার ডাপা এলাকায়। তাঁকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী শারমীন বেগম, মেয়ে সামিয়া আক্তার ও ছেলে তানভীন হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর গতকাল বিকেলে তাঁরা নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলম ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামানের পৃথক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার জামাল হোসেনের লাশ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই তাঁর বড় ভাই আবদুল মান্নান মিয়া ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় জামাল হোসেনের স্ত্রী শারমীন বেগম, মেয়ে সামিয়া আক্তার ও ছেলে তানভীন হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করার পর তাঁরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জামাল মিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
ওসি আসলাম হোসেন আরও বলেন, গতকাল বিকেলে জামাল হোসেনের স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলে পৃথক আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হত্যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাঁরা বলেন, জামাল মিয়ার সঙ্গে এক নারীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাঁদের সংসারে অশান্তি বিরাজ করছিল। গত মঙ্গলবার সকালে জামাল মিয়া ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর স্ত্রী শারমীন বেগম ছেলে-মেয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতের খাবারের সঙ্গে জামাল মিয়াকে ১০ থেকে ১২টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেওয়া হয়। জামাল ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে তাঁর পা স্ত্রী ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। পরে তাঁর ছেলে ও মেয়ে ধরে উপর্যুপরি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। পরদিন সকালে ভাড়াটেদের ডেকে লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।