রায় ঘোষণার ধার্য দিনে আসামির কাঠগড়ায় হাজির আসামি আবুল হাসেম মাঝি। বিচারক রায় ঘোষণা করে তাঁকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি তাঁর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের ডাকা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এ সুযোগে আসামি উধাও হয়ে যান।
আজ সোমবার দুপুরে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ খাইরুল আমীনের আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুদ্দিন পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, চেক প্রত্যাখানের মামলায় বিচারক আসামিকে সাজা দেন। তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের ডাকা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এ সুযোগে আসামি পালিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, জেলা কোর্ট পুলিশ প্রায়ই দায়িত্বে গাফিলতি করে। এর আগেও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জেলা কোর্ট পরিদর্শককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল। আজ সারা দিন কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখতে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে জেলা কোর্ট পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সদস্যরা কোর্টে থাকেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আদালত সূত্র জানায়, বিভিন্ন ইটভাটায় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে থাকেন আবুল হাসেম মাঝি। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার মেসার্স চারিয়া ব্রিকস ফিল্ড মালিক মো. কাশেমের সঙ্গে শ্রমিক নিয়োগের চুক্তি করেন তিনি। এ জন্য আবুল হাসেম মো. কাশেমের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা নেন। পরে শ্রমিক সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইটভাটামালিক টাকা ফেরত চান। আসামি ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল নোয়াখালী খলিফারহাট সোনালী ব্যাংকের নিজ হিসাবের ২২ লাখ টাকার চেক দেন।
চেকটি ইটভাটা ব্যাংকে উপস্থাপন করলে আসামির ব্যাংক হিসাব তারও দুই বছর আগে ২০১৭ সালের ২৬ জুন বন্ধ হয়ে যায় বলে উল্লেখ করে চেকটি ডিজঅনার (প্রত্যাখান) হয়। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই আসামিকে আইনগত নোটিশ দেওয়ার পর ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেন। আজ ছিল রায় ঘোষণার দিন।
আসামির আইনজীবী আশিষ কুমার শীল বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় ছিলেন। পরে আসামি কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান। এ সময় আদালতে কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না। বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে ডেকেও কোনো পুলিশ সদস্যকে পাননি। আইনজীবী নিজেও আসামিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাননি।