বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বরগুনার বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেনকে নির্বাচনী সহিংসতার মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুব আলম তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে হাজতখানায় আসামিদের সেলফি তোলা নিয়ে পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়ারের মা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং সাধারণ সম্পাদক আল-আমিনের এলএলবি পরীক্ষা রয়েছে কাল শুক্রবার। হাসপাতালে ভর্তি ও এলএলবি পরীক্ষার কাগজপত্র আদালতে দাখিল করে জামিনের আবেদন করা হলে আদালতের বিচারক তাঁদের জামিন দিয়েছেন।
তবে মামলার বাদী তারিকুজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘আসামিরা পদধারী, তাঁদের জামিন হয়েছে। আমি ভয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছি না। আমি অনিরাপদ বোধ করছি।’
এর আগে গত বুধবার একই মামলায় জামিনের আবেদন করেন আসামিরা। আদালত তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে নেওয়ার আগে তাঁদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখানে তাঁরা সেলফি তোলেন। গতকাল বুধবার হাজতখানায় তোলা তাঁদের সেই সেলফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগ মোর্শেদ শাহরিয়া তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ছবিটি পোস্ট করে লেখেন, ‘নৌকার নির্বাচন করতে গিয়ে কারাবরণ করতে হলো আমাদের।’
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মারুফ আহমেদ বুধবার দাবি করেছিলেন, আদালতের বাইরে থেকে তাঁদের সমর্থকেরা গোপনে ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারেন। হাজতখানার ভেতরে মুঠোফোন নিয়ে সেলফি তোলার কোনো সুযোগ নেই। তখন হাজতখানার মধ্যে তোলা সেলফি তাঁকে দেখানোর পরে তিনি বলেন, ‘হাজতখানার দায়িত্বে যেসব পুলিশ সদস্য ছিলেন, তাঁদের গাফিলতি থাকতে পারে। আমরা যখন কোনো আসামিকে হাজতখানায় নিয়ে আসি, তখন শরীরে তল্লাশি চালিয়ে ব্যাগ, মুঠোফোন, ক্যামেরা বাইরে রেখে দিই। তবে আসামিদের সঙ্গে তাঁদের স্বজনেরা আসেন, হয়তো তাঁরা কোনোভাবে ছবি তুলে থাকতে পারেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান (প্রশাসন ও অপরাধ) বলেন, আদালতে সেলফি তোলার ঘটনায় দায়িত্ব পালনে পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রচারণার সময় বরগুনার বামনা উপজেলার বামনা সদর ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুজ্জামান ও বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের শতাধিক কর্মী আহত হন। সে সময় পুলিশের করা মামলায় কারাগারে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুজ্জামান। পরে বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেনকে প্রধান আসামি ও সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়াকে ২ নম্বর আসামি করে ২৭ জনের নামে মামলা করেন তারিকুজ্জামান।