আত্রাই নদের সোতিজাল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আজ বৃহষ্পতিবার নাটোরের গুরুদাসপুরে।
আত্রাই নদের সোতিজাল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আজ বৃহষ্পতিবার নাটোরের গুরুদাসপুরে।

আত্রাই নদ থেকে দুটি সোতিজাল উচ্ছেদ

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আত্রাই নদ থেকে দুটি সোতিজাল উচ্ছেদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ওই সোতিজাল উচ্ছেদ করে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

তবে আত্রাই নদ এখনো সোতিজালমুক্ত হয়নি বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তিরা। আত্রাইয়ের শাখানদীতে এখনো তিনটি সোতিজাল রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উপজেলা বিয়াঘাট ইউনিয়নের আত্রাই নদের সাবগাড়ী বাজার পয়েন্ট, শাখানদীর হরদমা নালা ও আত্রাইয়ের খুবজীপুর ইউনিয়নের কালাকান্দর পয়েন্টে মাছ শিকারের জন্য বাঁধ দিয়েছেন। নদের উভয় তীরে বাঁশ, চাটাই ও নেট জালের সাহায্যে বাঁধ দিয়ে নদকে সংকুচিত করা হয়েছে। নদের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের গতিকে বহুগুণ বাড়িয়ে কৃত্রিম স্রোত সৃষ্টি করে নিষিদ্ধ সোতিজাল পেতে মাছ শিকার করা হচ্ছে। আত্রাই নদে এভাবেই চলছে অবৈধ সোতিজাল পেতে মাছ শিকারের মচ্ছব।

নদের উভয় তীরে বাঁশ, চাটাই ও নেট জালের সাহায্যে বাঁধ দিয়ে নদকে সংকুচিত করা হয়েছে। নদের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের গতিকে বহুগুণ বাড়িয়ে কৃত্রিম স্রোত সৃষ্টি করে নিষিদ্ধ সোতিজাল পেতে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

এতে ছোট-বড় সব ধরনের মাছসহ জলজ প্রাণী ধরা পড়ছে। ফলে আত্রাইসহ বিভিন্ন নদ-নদী, জলাশয় ও চলনবিল এলাকায় ছোট-বড় মাছসহ জলজ প্রাণী বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নদের স্রোতের কারণে প্রায়ই ঘটছে নৌকাডুবির মতো দুর্ঘটনা। স্রোতের কারণে প্রতিবছর নদের উভয় পাড় ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

আত্রাই নদের সোতিজাল উচ্ছদ করছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল।

স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা জানান, সাবগাড়ী এলাকায় রবিউল করিম, আবদুল মান্নান ও তাঁর সহযোগীরা, শাখানদীতে (ক্যানেলে) রবিউলের সহযোগী দুলাল হোসেন ও তাঁর সহযোগী এবং কালাকান্দর পয়েন্টে রবিউল করিম ও তাঁর সহযোগীরা ওই সোতিজালের ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রবিউল করিম জানান, এলাকার প্রান্তিক জেলেদের সঙ্গে নিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, জীববৈচিত্র্যসহ নদী ও বিলকে রক্ষা করতে এসব অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, কমসংখ্যক লোকবলের কারণে সময়মতো অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে অচিরেই নালায় স্থাপিত বাকি সোতিজালগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে জানান, সময় স্বল্পতার কারণে আত্রাই নদের দুটি সোতিজাল ধ্বংস করা হয়েছে। সময় করে আত্রাই নদের নালায় স্থাপিত অন্য সোতিজালগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।