রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কাজে বাধা দেওয়ায় আখাউড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তারিকুল ইসলামকে এক ঠিকাদার পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই প্রকৌশলী আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে আখাউড়া পৌর শহরের তারাগণ গ্রামে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ওই ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। রাতেই মামলা করা হয়েছে আখাউড়া থানায়।
অভিযুক্ত মো. ইয়াছিন মিয়া মেসার্স কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। আখাউড়া পৌরসভার নিয়মিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটি। ঘটনার পর ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে পৌরসভা।
আমি নিম্নমানের কাজের খোঁজ পেয়ে তারাগণ যাই। সরেজমিন নিম্নমানের কাজ দেখে বাধা দেওয়ায় ওই ঠিকাদার তাঁর লোকজন নিয়ে আমাকে কিল–ঘুষি দেন এবং টি-শার্টের কলার ছিঁড়ে ফেলেন।মো. তারিকুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী, আখাউড়া পৌরসভা
পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ নভেম্বর থেকে মেসার্স কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজ বিনা টেন্ডারের আখাউড়া পৌর শহরের আখাউড়া আগরতলা সড়ক থেকে তারাগণ পর্যন্ত ৮৮৫ মিটার রাস্তার সংস্কারকাজ শুরু করে। প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের মালামাল দিয়ে রাস্তা কার্পেটিং করার অভিযোগ ওঠে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তারিকুল ইসলাম রাস্তার সংস্কারকাজটি দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে তারাগণ যান। সরেজমিন অভিযোগের সত্যতা পান তিনি। ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. ইয়াছিন মিয়াকে সেই মুহূর্তেই কাজ বন্ধ রাখতে এবং ভালো মালামাল এনে কাজ করতে বলেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে ইয়াছিন তাঁর লোকজন নিয়ে প্রকৌশলীর ওপর হামলা করেন। পরে প্রকৌশলীকে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আমি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছি, সেটা আমার ভুল হয়েছে। এ জন্য ক্ষমা চেয়েছি। এটা শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা টেন্ডারে করা হচ্ছে তারাগণের রাস্তাটি। পরে টেন্ডার হলে যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে, তার সঙ্গে সমন্বয় করে নেব।মো. ইয়াছিন মিয়া, অভিযুক্ত ঠিকাদার
প্রকৌশলী মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিম্নমানের কাজের খোঁজ পেয়ে তারাগণ যাই। সরেজমিন নিম্নমানের কাজ দেখে বাধা দেওয়ায় ওই ঠিকাদার তাঁর লোকজন নিয়ে আমাকে কিল–ঘুষি দেন এবং টি-শার্টের কলার ছিঁড়ে ফেলেন।’
মেসার্স কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ইয়াছিন মিয়া অভিযোগ স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছি, সেটা আমার ভুল হয়েছে। এ জন্য ক্ষমা চেয়েছি। এটা শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা টেন্ডারে করা হচ্ছে তারাগণের রাস্তাটি। পরে টেন্ডার হলে যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে, তার সঙ্গে সমন্বয় করে নেব।’
আখাউড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মানিক মিয়া বলেন, ‘কাজটি হচ্ছে আমার ওয়ার্ডে। অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। ঠিকাদার তাঁর প্রভাব খাটিয়ে এই কাজ করছেন।’
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা বলেন, কাজের মালামাল নিম্নমানের প্রমাণ পেয়ে প্রকৌশলী কাজে বাধা দেওয়ায় ঠিকাদার প্রকৌশলীকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারের লাইসেন্স কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।