জয়পুরহাটে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অবসর চৌধুরী ও আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আহসান কবিরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর উপজেলার পশ্চিম মাতাপুর রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সোহেল চৌধুরী (৩৫), শাকিল আহাম্মেদ (৪৮), সাখাওয়াত হোসেন (৪২) ও আনোয়ার হোসেন (৪০)। তাঁরা সবাই আহসান কবিরের সমর্থক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুকিন্দীপুর ইউপিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অবসর চৌধুরী ও আহসান কবিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সেখানকার দলীয় নেতা-কর্মীরাও দুই ভাগে বিভক্ত। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পশ্চিম মাতাপুর রেলগেট এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
তবে সভা শুরুর আগেই দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে স্থান পরিবর্তন করে ওই আলোচনা সভা পূর্ব মাতাপুর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়।
আহসান কবিরের ভাষ্য, গতকাল আলোচনা সভা শুরুর আগেই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাহফুজ চৌধুরীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর লোকজনের ওপর হামলা চালান এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে তাঁর চার সমর্থক গুরুতর আহতসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর সমর্থক শাকিল আহাম্মেদের বাঁ পায়ের হাঁটু নিচে জখম হয়েছে। অবসর চৌধুরীর নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে আহসান কবির দাবি করেন। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজ চৌধুরী বলেন, ‘আহসান কবিরের লোকজন রেলগেটে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। আমরা কাউকে মারধর করিনি। ওই জায়গায় কোনো আলোচনা সভার আয়োজনও করা হয়নি। কোনো কারণ ছাড়াই আহসান কবিরের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অবসর চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, আহত চারজনকে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে।
জানতে চাইলে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, পশ্চিম মাতাপুর রেলগেট এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।