লালমনিরহাটে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্যকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। লালমনিরহাট বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান আজ মঙ্গলবার সকালে এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মুশরত মদাতী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে হাসান আলী, একই উপজেলার উত্তর মুশরত মদাতী গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে আসমত আলী।
এদিকে ওই একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আজ একই আদালতে পৃথক রায়ে হাসান আলী, আসমত আলীসহ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৫ সদস্যের প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন কালীগঞ্জের চরভোটমারী গ্রামের মুনছার আলীর ছেলে শাফিউল ইসলাম, একই উপজেলার উত্তর মুশরত মদাতী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আবু নাঈম ও একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. আলী হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় মুশরত মদাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কয়েকজন সদস্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হন। ওই সময় রংপুর র্যাব-১৩–এর সদস্যরা কালীগঞ্জের তুষভাণ্ডার বাজারে অবস্থান করছিলেন। গোপন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ১০–১২ জন দৌড়ে পালিয়ে যান এবং হাসান আলী ও আসমত আলীসহ অপর ৩ জনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে স্বীকার করেন।
অভিযানকালে তল্লাশি চালিয়ে হাসান আলী ও আসমত আলীর কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দুটি এমএম পিস্তলসহ গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে একটি এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়। ওই দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে লালমনিরহাটের সংশ্লিষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর অভিযুক্ত আসামিদের উপস্থিতিতে লালমনিরহাটের সংশ্লিষ্ট আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। আজ সকালে লালমনিরহাট বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান ওই দুই মামলার রায় দেন।
লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আকমল হোসেন আহমেদ বলেন, অস্ত্র আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা একই সঙ্গে দুই মামলার সাজা ভোগ করবেন।