সিলেট ও সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যার কারণ হিসেবে কিশোরগঞ্জের ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইনের অল-ওয়েদার সড়ককে দায়ী করার প্রতিবাদে অষ্টগ্রামে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সড়কটির অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্টে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হাওর মানে বিচ্ছিন্ন জনপদ। সড়ক না থাকায় বর্ষায় নৌকা ও গ্রীষ্মে পা ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প কোনো অবস্থা ছিল না। হাওরে মানবিক বিপর্যয় ঘটলেও লোকসমাজে তা দৃশ্যমান হতো না। উপজেলার এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগত। জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা রীতিমতো বিস্ময় ছিল। শত বছরের দুর্ভোগ লাঘব করেছে এই অল-ওয়েদার সড়ক। সড়কটি হওয়ার পর হাওরবাসীর যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেকটা কমে গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, হাওরের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। দেশবাসীর নজর কেড়েছে। কিন্তু হাওরের অবহেলিত জনপদের মানুষের এই ভালো সহ্য হচ্ছে না দেশের একশ্রেণির মানুষের। তাঁরা সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার দায় চাপাচ্ছে সড়কটির ওপর। শুধু তা–ই নয়, সড়কটিকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার সঙ্গে সড়কটির কোনো যোগসূত্র নেই। কারণ, এখনো সড়কের দুই পাশের পানি সমান। যদি সড়কের কারণে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতো, তাহলে এক পাশে পানি বেশি থাকত, অন্য পাশে কম। এই অপপ্রচার অজ্ঞতা ও পরশ্রীকাতরতা ছাড়া কিছুই নয়। কর্মসূচি থেকে বক্তারা অল-ওয়েদার সড়ক নিয়ে অপপ্রচার বন্ধের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক হায়দারী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম, সরকারি রোটারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক সৈয়দা নাসিমা আক্তার, কাস্তুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া, দেওঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে সারা বছর চলাচল উপযোগী পাকা সড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। অল–ওয়েদার সড়ক নামে পরিচিত সড়কটি ২০২০ সালরে ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।