রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রীকে জরিমানা করা ও ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে কমিটি। আজ রোববার দুপুরে শফিকুল ইসলাম ও অভিযোগকারী যাত্রী ইমরুল কায়েসের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
এর আগে গতকাল শনিবার তদন্ত কমিটি গঠনের পর দুজনকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে তলব করা হয়। রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা কার্যালয়ে আসেন। পরে মৌখিকভাবে দুজনের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনেন এবং লিখিতভাবে তা নথিভুক্ত করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলাম বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে দুজনের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ঘটনার রাতে ট্রেনে থাকা রেলকর্মী ও কিছু যাত্রীকে শনাক্ত করে তাঁদের ভাষ্য শোনা হবে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে টিটিই শফিকুল ইসলামের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে কাজে বহাল থাকার আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১১ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করেন।
শহীদুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। প্রাথমিকভাবে তাঁর মনে হয়েছে কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়া কর্মীকে এভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি। এ ক্ষেত্রে যিনি বরখাস্ত করেছেন, তিনি যদি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে কাজটি করেন, তবে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়টিও পরিষ্কার হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে তিন যাত্রী ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তাঁরা ট্রেনের এসি কামরায় বসে ছিলেন। তাঁদের কাছে ভাড়া চাইলে টিটিইর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ওই তিন যাত্রী নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় বলে পরিচয় দেন। টিটিই শফিকুল ইসলাম তাঁদের কাছে থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা ভাড়া নিয়ে এসি কামরা থেকে শোভন কামরায় পাঠান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মুঠোফোনে টিটিই শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।