আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার আগে পাবনার বেড়া পৌর শহরের বেশির ভাগ মানুষের মুখেই ছিল না মাস্ক। মানা হচ্ছিল না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি। কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর পাল্টে যায় দৃশ্য। বাজারে আসা লোকজন ও দোকানিদের প্রায় সবার মুখেই দেখা যায় মাস্ক।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে বেড়া পৌর শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী।
এ সময় মাস্ক না পরা, মাস্ক ঝুলিয়ে রাখা, পকেটে রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণ আইনে ১৭ জনকে ১০০ টাকা করে মোট ১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ইউএনও জনসাধারণের মধ্যে স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সতর্ক করেন।
অভিযান শুরু হতেই বদলে যায় বাজার এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দৃশ্যপট। দোকানি ও বাজারে আসা লোকজন যে যাঁর মতো দৌড়ে গিয়ে দোকান থেকে মাস্ক কিনে দ্রুত পরে ফেলেন। অভিযানের পরও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেশির ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা অঞ্জন রাহা বলেন, ‘বেড়া পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ও দোকানপাট ঘুরে দেখি সবার মুখেই মাস্ক। বিষয়টি দেখে খুব ভালো লাগল, একই সঙ্গে বেশ অবাকও হলাম। পরে শুনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ফল এটা। এভাবে সবার মাস্ক পরা যাতে অব্যাহত থাকে, সে ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার হাটবাজারে মানুষের মধ্যে এখন আর করোনাভীতি নেই বললেই চলে। হাটবাজারের দোকানি থেকে শুরু করে ক্রেতাদের তেমন কেউই মাস্ক পরছেন না। এমনকি সেলুন ও রেস্তোরাঁর মতো জায়গাগুলোতেও কাজ করার সময় কর্মীরা মাস্ক পরেন না। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই যাচ্ছে।
বেড়া পৌর এলাকার কলেজশিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অভিযানের পর সেলুনকর্মী, রেস্তোরাঁকর্মীসহ বেশির ভাগ দোকানিকেই মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা যায়। কিন্তু তাঁদের মুখে মাস্ক কত সময় থাকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।’
ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘হাটে-বাজারে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। বিষয়টি দুঃখজনক। এদিকে সামনে শীত এলে করোনার প্রকোপ আরও বাড়বে। তাই জনসাধারণকে সচেতন করতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’