ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকায় পেঁয়াজের আড়ত বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আজ সোমবার সকাল থেকে পেঁয়াজের শতাধিক আড়ত বন্ধ রয়েছে। এ কারণে আজ সকাল থেকে কোনো বেচাকেনা হচ্ছে না।
ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর দেশেও পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। খাতুনগঞ্জে গত শনিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য ওঠে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। এরপরই পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে ১০ জন আড়তদারকে জরিমানা করা হয়। অভিযানের পর গতকাল বিকেলে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায়।
অভিযানের প্রতিবাদে আজ একযোগে সব আড়ত বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।
পেঁয়াজের বেশির ভাগ আড়ত খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লা মিয়া মার্কেটে। আড়ত বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা আড়তের সামনে সড়কে অবস্থান করছেন।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে জানান, সংগঠন থেকে কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। মূলত জরিমানার শিকার ব্যবসায়ীরা আড়ত বন্ধ রাখার পর সব আড়তই বন্ধ করে দেওয়া হয়। পণ্যের দাম বাড়ানোর নেপথ্যে আড়তদারদের ভূমিকা নেই বলে তিনি জানান।
গতকাল ভ্রাম্যমাণ আদালত যে ১০ আড়তকে জরিমানা করেছেন, সেগুলোর একটি আল আরাফাত ট্রেডার্স। এই আড়তের কর্ণধারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি কর্ণধার আজগর হোসেন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আড়তের ব্যবসার ধরন হলো কার্যত কমিশন এজেন্ট। আমদানিকারক আড়তে পণ্য পাঠানোর পর যে দরে বিক্রি করতে বলে, সে দরেই আমরা বিক্রি করি। তা থেকে কমিশন পাই আমরা। তারা কী দরে পণ্য আমদানি করেছে, তার নথি আমাদের দেয় না। তাহলে দাম বাড়ানোর জন্য আমরা কীভাবে দায়ী?’
আরেকটি আড়ত মোহাম্মদীয় বাণিজ্যালয়ের কর্ণধার মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কালোবাজারি না। অবৈধ মজুতদারিও করছি না। আমদানিকারকের পণ্যই তাদের ঘোষিত দরেই বিক্রি করছি। এটা করতে গিয়ে যদি অবৈধ কালোবাজারি হিসেবে পরিচিত হই, তাহলে কীভাবে ব্যবসা করব।’ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন চাইলে কে কত দরে পেঁয়াজ আমদানি করেছে, তা জানতে পারে। আমদানির কাগজপত্র ছাড়া যদি বিক্রি নিষিদ্ধ হয়, তাহলে স্থলবন্দর থেকেই তা কার্যকর করতে পারে। আড়তদাররা কেন দায় নেবেন?
এই কর্মসূচি সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যায় তাঁরা বৈঠকে বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন। তবে প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান।
বাজারে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে গতকাল এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। অভিযানে আড়তদারেরা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। মুঠোফোনে আমদানিকারকেরা যখন যে দর দেন, সেই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে বাজার অস্থিতিশীল করা হয়েছে। এ জন্যই জরিমানা করা হয়েছে। বাজার অস্থিতিশীল হলে অভিযান পরিচালনা করা হবেউমর ফারুক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক আজ প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে গতকাল এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।
অভিযানে আড়তদারেরা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। মুঠোফোনে আমদানিকারকেরা যখন যে দর দেন, সেই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে বাজার অস্থিতিশীল করা হয়েছে। এ জন্যই জরিমানা করা হয়েছে। বাজার অস্থিতিশীল হলে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।