কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ছেঁড়াদিয়া দ্বীপের সুরক্ষায় গতকাল সোমবার বিকেল থেকে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ছেঁড়াদিয়া ভ্রমণে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক।
সম্প্রতি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৩টি সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি হলো—প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটকের বিচরণ বন্ধ রাখা। এ নির্দেশনার আলোকে ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করা হয়।
সেন্ট মার্টিন জেটিঘাট থেকে ছেঁড়াদিয়া যাতায়াতের নৌযান আছে ৫৩টি। নিষেধাজ্ঞার পর আজ বিকেল পর্যন্ত সব নৌযান জেটিঘাটেই বাঁধা ছিল। ছেঁড়াদিয়ায় নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্তর। নৌযান মালিকেরা বলেন, হঠাৎ করে পর্যটক পারাপারে নিষেধাজ্ঞা জারী করায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। ব্যাংকঋণ ও দায়দেনার টাকায় নৌযানগুলো কিনে আনা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটকের যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এত দিন ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটকেরা যাতায়াত করছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘গিজগিজ করছে পর্যটক, সংকটে ছেঁড়াদিয়া’ শিরোনামে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সেন্ট মার্টিন স্পিডবোট ও লাইফবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, গতকাল বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে নৌযান বন্ধের নির্দেশ দেন। এ সময় কিছু স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইদা পারভিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন ছেঁড়াদিয়া পর্যটকশূন্য। নৌযান নিয়ে ছেঁড়াদিয়াতে যেন কেউ যেতে না পারেন, তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে।
সেন্ট মার্টিনে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজমালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অব বাংলাদেশ’ (স্কুয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘সংকটাপন্ন ছেঁড়াদিয়ার জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সবার মেলে চলা উচিত। আমরাও চাই সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ–প্রতিবেশের সুরক্ষা। আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই পর্যটকদের জাহাজে তুলি, জাহাজে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামার পর সবকিছু ভুলে যান।’