নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় বাদীর পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন আইনজীবী কল্পনা রানী দাস। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সমিতির সদস্য ও নোয়াখালী জেলা বারের সদস্য। মামলায় সহায়তা করা ছাড়াও তিনি নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে ঢাকায় নিয়ে শেল্টার হোমে রেখে চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। আজ মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণার পর প্রথম আলো কথা বলে তাঁর সঙ্গে।
প্রথম আলো: আপনি কীভাবে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত হলেন?
কল্পনা রানী দাস: যখন নারী নির্যাতনের ঘটনাটি জানাজানি হলো, তখন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আমাকে ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে বলা হয়। তখন পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাদীর (ভিকটিম) সঙ্গে সবাইকে দেখা করতে দেওয়া হতো না। সমিতির সভাপতি সালমা আলী পুলিশ সুপারকে একটি চিঠি পাঠান। এরপর পুলিশ আমাকে ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেয়। এরপর প্রায় দুই মাস ওই নারীকে ঢাকায় মহিলা আইনজীবী সমিতির শেল্টার হোমে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে। তাঁর মানসিক অবস্থা পরিবর্তনে তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হলে আমি বাদীর কাছ থেকে ওকালতনামা নিয়ে মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের সহায়তাকারী হিসেবে মামলাটির সঙ্গে যুক্ত হই।
প্রথম আলো: আপনার সঙ্গে আর কারা যুক্ত ছিলেন?
কল্পনা রানী দাস: নারী নির্যাতনের এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির ভূমিকাই মুখ্য। তাঁর সহায়ক হিসেবে আমি ছাড়া জেলা বারের সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাছুল মামুন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেছেন।
প্রথম আলো: রায়ের পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
কল্পনা রানী দাস: রায় আমাদের (বাদীর) পক্ষে হয়েছে। এটি একটি ভালো দিক। অপরাধের বিচার আদালত করেছেন। ওই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তিই আসামিদের দিয়েছেন আদালত। তাই রায় নিয়ে অসন্তুষ্টির কিছু দেখছি না। উচ্চ আদালতেও এই রায় বহাল থাকবে বলে আশা করছি।
প্রথম আলো: নারী নির্যাতনের ঘটনা বন্ধে এই রায় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
কল্পনা রানী দাস: এই রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে অন্য যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটান কিংবা ঘটনোর মনোবৃত্তি রাখেন, তাদের কাছে একটি বার্তা যাবে। অপরাধ করলে আইনের কাছে অপরাধীর যে কোনো রেহাই নেই, এই রায়ের মধ্য দিয়ে সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন রোধে এই রায় ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।