সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, তিনি এবারের পৌরসভা নির্বাচনকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে নিয়েছেন। তিনি ভোট জালিয়াতির প্রতিবাদ করবেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট রুপালি চত্বরে আয়োজিত নির্বাচনী শেষ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে এই বসুরহাট পৌরসভায় নির্বাচন করছেন।
আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচনকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছে। আপনারা ইতিমধ্যে শুনেছেন, আমাদের প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের জন্য নোয়াখালীর এমপি, ফেনীর এমপি এক কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। এখানে শুধু আমার বিরুদ্ধে নয়, আমার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধেও চক্রান্ত চলছে। আজকে ভোটারদের টাকা দিচ্ছে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে।’
সেতুমন্ত্রীর ভাই বলেন, ‘আমার স্পষ্ট বক্তব্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। আমি শপথ করলাম, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। আমি এক ভোট পেলেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমি বাংলাদেশে প্রমাণ করে দিতে চাই গণতন্ত্র কী জিনিস। আমি প্রমাণ করে দিতে চাই, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কী জিনিস। আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। সত্য কথা বললে অসুবিধা, কারও কারও গায়ে লাগে। আমি বলতে চাই, এই কোম্পানীগঞ্জের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে। এ জন্য প্রশাসনকে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করে যাব। কেউ কোনো ধরনের ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবেন না।’
আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন বানচাল করতে আজ অস্ত্র পাঠানো হয়েছে কোম্পানীগঞ্জে। আমি প্রশাসনকে বলেছি অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য। অদৃশ্য কারণে আজ কিছুই হচ্ছে না। কষ্ট লাগে নোয়াখালী কে চালাচ্ছে? এটা কী রাজনীতি? অস্ত্রের ঝনঝনানি কোম্পানীগঞ্জের চলবে না, চলতে দেওয়া যাবে না।’ সেতুমন্ত্রীর ভাইয়ের আশঙ্কা, ‘ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আগামী দুই দিনের ভেতর কাউকে মেরে ফেলা হতে পারে। মেরে ফেলার পর আমার ওপর, আপনাদের ওপরে দায় চাপানো হতে পারে।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘গত ১২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর এখানে আসার কথা ছিল। আমি আশায় বুক বেঁধে ছিলাম, এই লোকটার কাছে মনের কথাগুলো বলব। তিনি আসলেন না। কেন আসলেন না? তবে আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি, আগামী পরশুর নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয়; যদি কোনো প্রার্থী বা কোনো কর্মীকে রাস্তায় বাধা দেওয়া হয়, এটার দায়িত্ব নোয়াখালীর ডিসি, এসপি ও নির্বাচন কর্মকর্তাকে নিতে হবে।’
আবদুল কাদের মির্জা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমি আজকে হলফ করে বলছি, যদি পরশু দিনের নির্বাচনে কোনো কারচুপি হয়, যদি আমি কারচুপিতে সহযোগিতা করি, তাহলে সে দিনই যেন আমার মৃত্যু দিন হয়। আমি কোনো কারচুপির নির্বাচন করব না। কিন্তু আপনাদের বলব, আপনাদের তো স্বভাব ১২টার পর বর্জন করা, সিলেটেও আপনারা ১২টার সময় নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। কোথাও কোনো কারচুপি হলে আমাকে জানাবেন, জনগণকে নিয়ে সেখানে ভোট বন্ধ করে দেব। প্রশাসন বন্ধ করবে না। তারা ম্যানেজ হয়ে গেছে। আমি ভোট বন্ধ করে এখানে (রুপালি চত্বর) এসে আন্দোলন শুরু করব।’
সমাবেশে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।