ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অনুমোদন ছাড়াই উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় এ সম্মেলন শুরু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই সম্মেলন চলায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়, হিসাব রক্ষণ কার্যালয়, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে।
সম্মেলনের জন্য ওই চত্বরে বিশাল প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পরিষদের প্রধান ফটক ঘিরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শুরুর পর উপজেলা পরিষদের পুরো চত্বর নিয়ন্ত্রণে নেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সাধারণ মানুষের উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢোকার কোনো সুযোগ ছিল না। এতে উপজেলার দূরদূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা অনেকেই উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢুকতে না পেরে ফিরে গেছেন।
সম্মেলন শুরুর পর দুপুর ১২টা থেকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকেল চারটা পর্যন্ত সম্মেলন চলমান থাকায় ওই সড়ক এখনো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
গোয়ালনগর ইউপি থেকে আমির হোসেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বীজ ও সারের খোঁজ নিতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, সম্মেলনের কারণে তিনি ভেতরে ঢুকতে পারেননি। এত দূর থেকে এসে তাঁর কোনো কাজ হয়নি। এখন তিনি নিরাশ হয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অনেকটাই অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। জানতে চাইলে বেলা দুইটার দিকে মুঠোফোনে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছে। আয়োজকেরা বলেছিল, দুপুরের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনো অনুষ্ঠান চলছে। অনুষ্ঠানের জন্য উপজেলার সরকার দপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
সম্মেলন আয়োজনের অনুমতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনারা একটু আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেন।’
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান আরিফের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ ভালো বলতে পারবে। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের সঙ্গেই কথা বলার পরামর্শ দেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সাংসদ বি এম ফরহাদ হোসেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি উদ্দিন আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন