অনলাইনে বিক্রি ৬০ ভাগ পশু

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কেরানীগঞ্জে বিক্রির জন্য ৬৫৬টি খামারে ৯ হাজার ৬২১টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা।

১ হাজার ১০০ কেজি ওজনের গরু ‘ব্ল্যাক জায়ান্ট’। গত শনিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের জয়নগরে এসএএস অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফুডস খামারে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের খামারগুলোতে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রস্তুত করা হচ্ছে বাদশাহ, শাহেনশাহ, সুপারস্টার, ব্ল্যাক জায়ান্ট নামের বিশাল আকৃতির ষাঁড়। এ ছাড়া শাবনূর ও পরীমনির মতো নায়িকাদের নামে নাম রাখা হচ্ছে উন্নত জাতের ছাগল ও গারো ভেড়ার নাম।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে কেরানীগঞ্জে বিক্রির জন্য ৬৫৬টি খামারে ৯ হাজার ৬২১টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৩০০টি ষাঁড়, ৭৪০টি মহিষ এবং বাকিগুলো ছাগল ও ভেড়া। এ ছাড়া গত বছর কেরানীগঞ্জে ছোট–বড় মিলিয়ে ৭৪৭টি গবাদিপশুর খামার ছিল, পশুর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯৭৯টি।

করোনার কারণে কেরানীগঞ্জের ৬৫৬টি খামারে ৬০ শতাংশ গবাদিপশু খামার থেকে ইতিমধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হয়ে গেছে।

গত শনিবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের ওয়াশপুর এলাকায় মো. রায়হানের মালিকানাধীন তানভীর অ্যাগ্রো খামারে গিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, ‘বর্তমানে খামারে শতাধিক ছোট-বড় ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। এখানে নায়িকা শাবনূরের নামে প্রায় ৬০ কেজি ওজনের নেপালি জাতের ছাগলের নাম রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নায়িকা পরীমনির নামে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের গারো ভেড়ার নাম রাখা হয়েছে। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে শাবনূরের দাম হাঁকানো হয়েছে ৭০ হাজার টাকা, আর পরীমনির দাম ৪০ হাজার টাকা।’

জয়নগর এলাকার এসএসি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফুডস খামারে গিয়ে দেখা গেছে, এ খামারে ছোট-বড় শতাধিক ষাঁড় ও বলদ রয়েছে। সাড়ে আট শ কেজি ওজনের বাদশাহ নামের একটি ষাঁড় রয়েছে। দাম হাঁকানো হয়েছে ৯ লাখ টাকা। আট শ কেজি ওজনের সুপারস্টারের দাম হাঁকানো হয়েছে আট লাখ টাকা। ১ হাজার ১০০ কেজি ওজনের ব্রামা জাতের ব্ল্যাক জায়ান্টের দাম হাঁকানো হয়েছিল ৯ লাখ টাকা। দরদাম শেষে এটি সাত লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। সাড়ে সাত শ কেজি ওজনের ষাঁড় শাহেনশাহরের দাম চাওয়া হয়েছিল আট লাখ টাকা। ৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি হয়েছে।

এসএসি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফুডসের পরিচালক আহনাফ কাইফ বলেন, ‘ বর্তমানে খামারে ১৩০টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১০০টি গরু অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতারা ফেসবুক থেকে গরুর ছবি দেখে খামারে চলে আসে। গরু দেখে দরদাম করে তারা নিয়ে যায়। খামারের সবচেয়ে বড় গরু ব্রামা জাতের ব্ল্যাক জায়ান্ট ৭ লাখ টাকায় এটি বিক্রি করা হয়েছে।’

সোনাকান্দা ছাড়াভিটা এলাকার মডার্ন ডেইরি অ্যান্ড অ্যাগ্রোর পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্রয়যোগ্য গবাদিপশুর ছবি, ভিডিও ও অন্যান্য তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছি। তা দেখে ক্রেতারা অনলাইনেই পছন্দসই পশু খুঁজে নিচ্ছেন।’ কেরানীগঞ্জের ধর্মসুর এলাকার রহমত ডেইরি খামারের পরিচালক ওয়াসিম রাজা বলেন, ‘আশা করছি, এ বছর গরুর বাজার ভালো যাবে।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, গত বছর কেরানীগঞ্জে ছোট–বড় মিলিয়ে ৭৪৭টি গবাদিপশুর খামার ছিল, পশুর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯৭৯টি। এ বছর ৬৫৬টি খামারে ৯ হাজার ৬২১টি কোরবানির পশু রয়েছে।