নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ

বন্যার পর নোয়াখালীতে সাপের উপদ্রব, ১২ দিনে ২২৫ জন আহত

বন্যার পানি মাড়িয়ে হাঁটছিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের মধ্য করিমপুর গ্রামের মারজাহান বেগম (১৬)। হঠাৎ পায়ের নিচে একটি সাপ পড়ে। সাপের ছোবলে চিৎকার দিতেই প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনাটি গত রোববার বিকেলের। চিকিৎসা নিয়ে মারজাহান এখন অনেকটাই সুস্থ।

গত ২২ আগস্ট থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সাপের কামড় নিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২৫ জন রোগী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন। অল্প সময়ের মধ্যে এত বেশি সাপের কামড়ের রোগী আগে কখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেননি বলে জানান চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক নিরুপম দাশ প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার পানিতে সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বন্যার পানিতে চলাচলের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। কাউকে অসাবধানতাবশত সাপে কামড় দিলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। দ্রুত নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসা পেলে সাপে কামড়ের রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অতিবৃষ্টি ও ফেনী হয়ে উজানের পানি ধেয়ে আসার কারণে নোয়াখালীতে বন্যা চলছে। প্লাবিত হয়েছে জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটিই। এতে বেড়ে গেছে সাপে কামড়ের ঝুঁকিও। ১৩ দিন ধরে প্রতিদিনই সাপে কামড়ের রোগী আসছেন হাসপাতালে।

গত ২২ আগস্ট থেকে গতকাল ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলার বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী সদর, কবিরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২২৫ জন সাপে কামড়ের রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছেন। তবে এই সময়ে সাপের কামড়ে কারও মৃত্যু হয়নি। অসুস্থ ব্যক্তিরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে ২০ জন সাপে কামড়ের রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানতে চাইলে সাপে কামড়ের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম। তিনি বলেন, বন্যার কারণে সাপে কামড়ের রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় সাপে কামড়ের রোগী এসেছেন ২৫ জন। তবে এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। হাসপাতালে যাঁরাই আসছেন, তাঁরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।